হোম অন্যান্যলিড নিউজ পাটকল বন্ধের নোটিশে হতাশ খুলনার শ্রমিকরা

পাটকল বন্ধের নোটিশে হতাশ খুলনার শ্রমিকরা

কর্তৃক
০ মন্তব্য 113 ভিউজ

খুলনা অফিস :

গত কয়েকদিন ধরে নানা জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার নোটিশে হতাশা নেমে এসেছে খুলনার শ্রমিকদের মধ্যে। হা হুতাশ আর কান্নায় ভেঙে পড়েছে শ্রমিকরা। শ্রমিক পরিবারে চলছে কান্নাকাটির মাতম। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের এ ঘোষণার পর থেকেই শ্রমিকদের মধ্যে এমন অবস্থা বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকলগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে শ্রমিকদের শতভাগ পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।

সরকারের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আজ শনিবার সকালে বৈঠক করে খুলনা অঞ্চলের শ্রমিকরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে বলে জানিয়েছেন প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের সিবিএ সভাপতি সাহানা শারমিন। তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবি উপেক্ষা করে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে পড়েছে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব ৯টি পাটকলের হাজার হাজার শ্রমিক। চাকরি শেষে যে সব শ্রমিক অবসরে যাবে তারা আশঙ্কা করছেন, সরকারি প্রতিশ্রুতি মতো তারা টাকা পাবে কি না। তাদের দাবি সরকার এককালীন টাকা পরিশোধ করবে। যারা ১০-১২ বছর চাকরি করছে, তাদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা চাকরি হারানোর পর কী করবে এ নিয়ে তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এর আগে পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত সপ্তাহ জুড়ে নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে পার করে শ্রমিকরা। গেল রোববার দুপুরে মহানগরীর খালিশপুর জুট ওয়ার্কার্স ইন্সটিটিউট কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে চার দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল রক্ষা সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক সরদার আব্দুল হামিদ। তবে পাটকল বন্ধের কোন নোটিশ বা চিঠি না পাওয়ায় তারা সেই কর্মসূচি স্থগিত করে।

খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব ৯টি পাটকলে ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত এক হাজার ৪৭৫ কোটি ৫৭ লাখ ১৫ হাজার টাকার লোকসান হয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটির আওতায় পাটকল বন্ধ রাখা হয়। তবে চাল ও বীজের মোড়কের জন্য পাটজাত বস্তার সংকট তৈরি হলে ২৫ এপ্রিল থেকে সীমিত পরিসরে উৎপাদন শুরু করে পাটকলগুলো। কিন্তু ২৫ জুন ঢাকায় আন্তঃ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সারা দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব ২৫ পাটকল আবারও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকে খুলনা অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলে ৮হাজার ১০০ স্থায়ী শ্রমিক ও প্রায় ১৫ হাজার অস্থায়ী শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে।

এদিকে রাস্ট্রায়ত্ব পাটকলসমুহের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী গৃহীত পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্তের বিষয়টি সাধারণ শ্রমিকদের অবগত করানোর জন্য খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন গতকাল শুক্রবার খালিশপুরের প্লাটিনাম জুবিলী, ক্রিসেন্ট সহ বিভিন্ন মিলে গিয়ে শ্রমিকদের মাঝে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন লিফলেট আকারে বিতরণ করেন।শ্রমিকদের সমস্যার টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে সমুদয় প্যাপ্য অর্থের অর্ধেক নগদে এবং অবশিষ্ট অর্ধেক তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে বিতরণের প্রজ্ঞাপন হাতে পেয়ে শ্রমিকরা আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন