হোম ফিচার নড়াইলে ২৪ ঘন্টা করোনা রোগিদের পাশে যুব রেড ক্রিসেন্ট

মোস্তফা কামাল, নড়াইল :

রাতদিন একাকার করে করোনা রোগিদের পাশে ছুটে চলেছে নড়াইলের যুব রেড ক্রিসেন্ট একদল সেচ্ছাসেবী। জীবনের মায়া ত্যাগ করে স্কুল কলেজে পড়া এই সকল ছেলে মেয়েরা পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তখন রাত ২টা বেজে ১০ মিনিট। বর্ষার নিঝুম রাতে সবাই ঘুমে আচ্ছন্ন। হঠাৎ করে মুঠোফোন বেজে ওঠে। ফোন ধরে সালাম জানিয়ে জানতে চাই কে বলছেন?

ওপার থেকে ইদ্রিস শেখ নামে এক ব্যক্তি বলেন,আমার বাড়ি ভদ্রবিলা ইউনিয়নের রামসিধি গ্রামে। হঠাৎ করে আমার স্ত্রীর শরীরের অক্সিজেন লেবেল কমে গেছে। দ্রুত অক্সিজেন প্রয়োজন। খবর পেয়ে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নড়াইল ইউনিটের যুব প্রধান মো.শামীম আহম্মেদের নেতৃত্বে কয়েকজন সদস্য অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে সেই বাড়িতে ছুটে যান। পর্যবেক্ষণ করে তারা ওই আহত রোগিকে অক্সিজেনসেবা প্রদান করেন। আস্তে আস্তে তিনি সুস্থ্য হয়ে ওঠেন।

নড়াইল ইউনিটের যুব প্রধান মো.শামীম বলেন,মুঠোফোনটা আমার কাছে আসে। আমি বিষয়টি তখনই রেড ক্রিসেন্ট নড়াইল ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইসমাইল হোসেন লিটন ভাইকে জানাই। তাঁর নির্দেশনায় আমরা চারজন সদস্য অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ওই বাড়িতে ছুটে যাই। চলছি আর মুঠোফোনে তাদের সঙ্গে পখ চলার ঠিকানা শুনছি। ৭ কিলোমিটার যাবার পর দেখি রাস্তার ওপর কয়েকজন মানুষ দাঁড়িয়ে। অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যান । দেখি একজন মহিলার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা দ্রæত তাঁকে অক্সিজেন সিলিন্ডার সেট করে বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করি। এক পর্যায়ে তিনি আস্তে আস্তে সুস্থ্য হয়ে ওঠেন।

শামীম আরো বলেন,করোনার এই দুর্যোগ মুহুর্তে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একজন কর্মী হয়ে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত। খুব কাছে থেকে দেখেছি করোনা উপসর্গ নিয়ে একজন রোগি কিভাবে ছটফট করে মারা যায়। আমার হাতের ওপর ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই মৃত্যুর ভয়াবহতাও অনুভব করেছি। পরিবারের সদস্যদের কান্নার রোলে নিজেকে অনেক সময় ধরে রাখতে পারিনি।

রেড ক্রিসেন্ট নড়াইল ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইসমাইল হোসেন লিটন বলেন,করোনা মোকাবেলায় নড়াইল রেড ক্রিসেন্ট ২৪ ঘন্টা বিনামূল্যে অক্সিজেন ও অ্যাম্বুলেন্সসেবা,মাক্স বিতরণ,খাদ্য সহায়তাসহ নানা ধরণের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন,করোনার এই মুহুর্তে ৭ জুলাই আমাদের একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ায় খুবই উপকৃত হয়েছি। তিনি দাবি করেন এ পর্যন্ত ৯৯ জন রোগিকে অ্যাম্বুলেন্সসহ অক্সিজেনসেবা প্রদানে সক্ষম হয়েছি। প্রতিদিন ৬ থেকে ৭টি অক্সিজেনসেবা প্রদান চলছে। সদর হাসপাতালে প্রতিদিন করোনা রোগি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন আসুন আমরা সচেতন হই। মাক্স পড়ি,নিজে বাচি এবং অপরকেও বাচতে সহায়তা করি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন