হোম জাতীয় নিত্যপণ্যের বাজারে দাম বৃদ্ধির মিছিল

জাতীয় ডেস্ক :

দৈনিক সকালে ক্রেতা-বিক্রেতায় জমে ওঠে রাজধানীর প্রতিটি নিত্যপণ্যের বাজার। আর এই বাজারে আসা ক্রেতাদের জিজ্ঞেস করলেই তারা প্রায় সময়ই অভিযোগ করে থাকেন এলোমেলো তাদের দৈনিক বাজার হিসাবের খাতা। পণ্যের দাম বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যয়। তবে বাড়ছে না শুধু তাদের আয় বা ক্রয়ক্ষমতা।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির দৈনিক বাজার হিসাবের তালিকা পর্যবেক্ষণ করেও মেলে তাদের দাবির পক্ষে সমর্থন। চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা, আদা, রসুন, পেঁয়াজসহ ৩৭টি পণ্যের গত এক মাসের বাজার দর বিশ্লেষণে করে দেখা যায়, এই সময়ের মধ্যে মাত্র ২টি পণ্যের দাম কমেছে। বাকি ৩৫টি পণ্যের দামই বেড়েছে। শুধু কি বেড়েছে? কোন কোন পণ্যের দাম ৪৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অর্থাৎ এক মাস আগে যা কিনতে ১০০ টাকা ব্যয় করতে হতো ক্রেতাদের। বর্তমানে সেই একই পরিমাণ ও মানের পণ্য কিনতে ১৪৬ টাকা গুনতে হচ্ছে তাদের।

টিসিবির মাসভিত্তিক দামের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম। এক মাস আগে অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরীতে এককেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। বর্তমানে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এ সময়ে দেশি পেঁয়াজও দেখিয়েছে ঝাঁজ। ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরের পেঁয়াজ এক মাসের ব্যবধানে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়।

গত এক মাসে নিত্যপণ্যের বাজারে দাম বৃদ্ধির মিছিলে সামনে ছিল রসুন, অ্যাঙ্কর ডাল ও ময়দা। রসুনের দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। ১১০ টাকা কেজি দরের আমদানি করা রসুনের দাম বর্তমানে ১৩০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে অ্যাঙ্কর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। ১৬ শতাংশ দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতিকেজি ময়দার খুচরা মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকায়।

তেল, চিনিও নাভিশ্বাস তুলেছে ভোক্তাদের। মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল দিয়ে চলা সয়াবিন তেলের দাম এক মাসে বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ।

টিসিবি এর তথ্য অনুসারে, খুচরা বাজারে বর্তমানে এক লিটার খোলা সয়াবিনের দাম পড়ছে ১৩৬ থেকে ১৪২ টাকা। এক মাসে আগে এর দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকা। এক মাসে লিটারে দাম বেড়েছে ৫ টাকা। আর পাঁচ লিটারের বোতলে দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে পাঁচ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল কিনতে ৭২০ টাকা পর্যন্ত দাম গুনতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

বিগত এক মাসে কেজিতে ১ টাকা বেড়েছে সরু চালের দাম। মানভেদে এককেজি নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬৬ টাকায়। গত ২১ সেপ্টেম্বরে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়।

কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে নিত্যদিনে খাবারে দরকারি মসুর ডালের দামও। জিরা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গের দামও রয়েছে ঊর্ধ্বমুখী।

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির এই মিছিলে গা ভাসায়নি আলু ও দেশি আদা। এক মাসের এক কেজি আলুর দাম কমেছে ২ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। খুব বেশি না হলেও দেশি আদার দাম কমেছে। এক মাস আগে যেখানে এককেজি এই মসলা জাতীয় পণ্যে বিক্রি হত ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, সেখানে বর্তমান দর ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা।

এদিকে মাংসের বাজারে তৃপ্তির ঢেঁকুর নেই ভোক্তাদের। এক মাসের ব্যবধানে এককেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। ঊর্ধ্বমুখী দেশি মুরগির দামও। খাসির মাংস স্থিতিশীল থাকলেও দাম বৃদ্ধির মিছিলে যোগ দিয়েছে গরুর মাংস।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন