ডয়চে ভেলে :
সামরিক মহড়ার শেষেও তাইওয়ানের আশপাশে চীনা রণতরি ও যুদ্ধবিমান টহল দিচ্ছে বলে জানিয়েছে তাইপে৷ এদিকে, বড় ধরনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইন।
তাইওয়ান ঘিরে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধ আরও প্রকট হয়ে উঠছে৷ তিন দিনের ঘোষিত সামরিক মহড়ার পরেও তাইওয়ানের আশপাশে চীনা যুদ্ধবিমান ও রণতরি সরে যায়নি৷
গতকাল সোমবার (১০ এপ্রিল) দিনগত রাতে মহড়ার সমাপ্তি ঘোষণা করলেও তাইওয়ান দাবি করছে, ৯টি চীনা রণতরি ও ২৬টি যুদ্ধবিমান এখনও ওই অঞ্চলে টহল দিচ্ছে৷ বারবার সামরিক মহড়ার নিন্দা করলেও তাইওয়ান উত্তেজনা আরও না বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছে৷ মহড়ার সময় ৯১টি চীনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আশপাশে উড়ে গেছে বলে তাইওয়ানের সরকারি সংবাদ সংস্থা দাবি করেছে৷
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন গত শনিবার (৮ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে ফেরার পরেই চীন সামরিক মহড়া শুরু করে৷ সাই লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷
চীন আগেই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্র সফর ও স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিল৷ ফেসবুকের এক পোস্টে সাই লেখেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি বিশ্বের কাছে তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন৷ ফলে তাঁর বিদেশ সফর নতুন কিছু নয়৷ যুক্তরাষ্ট্র সফরও ব্যতিক্রম নয়৷’
এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে চীনের মনোভাব মোটেই দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দিচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট৷
চীনের সর্বশেষ সামরিক মহড়া জাপানেও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে৷ বিশেষ করে দেশটির দক্ষিণের দ্বীপগুলো তাইওয়ানের কাছে থাকায় সম্ভাব্য সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে৷ ওকিনাওয়া দ্বীপে মার্কিন বিমানবাহিনীর বিশাল ঘাঁটি রয়েছে৷
গত বছর আগস্টে তৎকালীন মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের সময় চীন যে সামরিক মহড়া চালিয়েছিল, সেই সময় চীনা ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকার মধ্যে পড়ে৷
মার্কিন প্রশাসনও তাইওয়ান ঘিরে চীনের কড়া মনোভাবের প্রেক্ষাপটে হাত গুটিয়ে বসে নেই৷ মঙ্গলবার ফিলিপাইনের সঙ্গে সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে তারা৷ প্রায় ১৮ হাজার সৈন্য বাৎসরিক এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে৷ অস্ট্রেলিয়ার ১০০ সৈন্যও তাতে যোগ দিচ্ছে৷ এর আওতায় এই প্রথম দক্ষিণ চীন সাগরেও ‘লাইভ ফায়ার ড্রিল’ চালানো হচ্ছে৷
তাইওয়ান থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে ফিলিপাইনের লুজোন দ্বীপেও হেলিকপ্টার দিয়ে মহড়া চালানো হচ্ছে৷ দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ফার্দিনান্দ মার্কোস যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার যে অঙ্গীকার করেছিলেন, তার আওতায় এমন মহড়া বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ গত কয়েক মাসে দুই দেশ যৌথভাবে দক্ষিণ চীন সাগরে টহলেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ফিলিপাইনে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী সামরিক উপস্থিতিও বাড়ানো হচ্ছে৷ এমন সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে চীন৷