হোম অন্যান্যসারাদেশ ডুমুরিয়ায় করোনা কালিন স্বাস্হ্য বিধি অমান্য করে শিক্ষা অফিসারকে সংবর্ধনা

ডুমুরিয়ায় করোনা কালিন স্বাস্হ্য বিধি অমান্য করে শিক্ষা অফিসারকে সংবর্ধনা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 108 ভিউজ

খুলনা অফিস:

করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে সরকার স্বাস্হ্য বিধি প্রণয় করে তা বাস্তবায়নের জন্য মাঠ প্রশাসন কাজ করছে । এরই মধ্যে সব বিধি নিষেধ কে উপেক্ষা করে ডুমুুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিকদার আতিকুর রহমান জুয়েলকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ হতে প্রাথমিক শিক্ষক মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জানা গেছে, প্রায় মাস খানেক পূর্বে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন সিকদার আতিকুর রহমান জুয়েল। নবাগত শিক্ষা অফিসার হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়ার উদ্যোগের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার কয়েকশ শিক্ষক সমবেত হন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ। আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি, সংবর্ধিত অতিথি,বিশেষ অতিথিবৃন্দ,অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, উপহার প্রদানকারী সহ মঞ্চে উপস্থিত অন্য কারও মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এমনকি অনুষ্ঠানে আগত শিক্ষক ও শিক্ষিকার অধিকাংশের মুখে মাস্ক ছিল না। এমনকি সামাজিক বা শারীরিক দুরত্বও মেনে বসা হয়নি, গাদাগাদি করে তারা সকলে চেয়ারে বসেছিলেন।

গত মার্চ মাস হতে করোনা সংক্রমন শুরু হলে প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্দ ঘোষনা করে যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। সরকারি বিভিন্ন সভা সেমিনার বর্তমানে ভার্সুয়াল পদ্ধতিতে জুম এপ’স এর মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক দপ্তরের উদ্যোগে একাধিক জুম মিটিং ও অনুষ্ঠিত হয়েছে। অথচ করোনা সংক্রমনে স্বাস্হ্যবিধি উপেক্ষা করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ঘটা করে এমন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনে এলাকার সচেতন মহলের বক্তব্য ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষকদের কতিপয় নেতৃস্হানীয় শিক্ষক তাদের স্কুল ফাঁকি দেয়া, তদবির বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সুবিধা নিতে ও কর্মকর্তাকে তুষ্ট করার মানুষিকতায় এমন আয়োজন করা হয়। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক নেতা বলেন, নতুন শিক্ষা অফিসার এসেছেন তাই তাকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় সময় দিতে পারছিলেন না এ জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন দেরি হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আতিকুর রহমান বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত কোন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিল না। প্রাথমিক শিক্ষার মূল্যায়ন সভা ছিল। ওই সভায় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ফুল ও উপহার দেয়া হয়’।এ দিকে শিক্ষা অফিসার পরিকল্পিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিলোনা দাবী করলেও সভায় উপস্হিত একাধিক শিক্ষক নিশ্চিত করেন যে,সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছার পাশাপাশি মানপত্র, নৌকা নির্মিত ক্রেস্ট দেয়া হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: শাহানাজ বেগম বলেন, করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে সরকার বিভিন্ন বিধি নিষেধ আরোপ করে তা বহাল রেখেছে। সীমিত আকারে সভার আয়োজন করা গেলেও অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেটি করতে হবে।

উপস্থিত শতভাগ মানুষের মুখে মাস্ক থাকতে হবে। সভা কক্ষের বাইরে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এছাড়া শারীরিক দুরত্ব মেনে বসতে হবে। তিনি আরোও বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হলে উপজেলা প্রশাসক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আমাকে বিষয়টি অবহিত করা উচিত ছিল। প্রসঙ্গত: ২০১৫ সালে অতি উৎসাহী প্রাথমিক শিক্ষকদের অপরিকল্পিত আয়োজনে তৎকালিন মৎস্য প্রতিমন্ত্রী স্থানীয় সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপিকে সংবর্ধনা ও উপহার দেয়ায় তিনি ব্যাপক বিতর্কের মধ্যে পড়ে বিব্রত হন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন