হোম আন্তর্জাতিক জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ ছিল আগেই, ফলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা: উঠে এলো তথ্য

জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ ছিল আগেই, ফলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা: উঠে এলো তথ্য

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 47 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতের আহমেদাবাদে গত মাসে ভয়াবহ এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের দুর্ঘটনায় অন্তত ২৭০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (এএআইবি) জানিয়েছে, উড্ডয়নের মাত্র ৩ সেকেন্ড পর উভয় ইঞ্জিনের জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ এ খবর জানিয়েছে।

শুক্রবার প্রকাশিত ১৫ পৃষ্ঠার প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই ইঞ্জিনের জ্বালানি বন্ধের সুইচ মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে বন্ধ করা হয়। এর ফলে উভয় ইঞ্জিন থ্রাস্ট হারায় এবং উড্ডয়নের ৩২ সেকেন্ডের মধ্যেই বিমানটি ভেঙে পড়ে।

ব্ল্যাক বক্স থেকে পাওয়া ককপিট ভয়েস রেকর্ডিংয়ে এক পাইলটকে অপর পাইলটকে জিজ্ঞাসা করতে শোনা যায়, ‘তুমি কেন বন্ধ করলে?’ জবাবে অপর পাইলট বলেন, ‘আমি করিনি’।

তদন্তে জানা গেছে, ২৬ মার্চ বিমানের বাঁ পাশের ইঞ্জিন এবং ১ মে ডান পাশের ইঞ্জিনটি সংযোজন করা হয়েছিল। তবে ২০২৩ সালের পর থেকে জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির খবর পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনার সময় একটি ইঞ্জিন আংশিকভাবে থ্রাস্ট পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হলেও অপর ইঞ্জিন তা পারেনি। এর পরপরই পাইলটরা ‘মেডে’ সংকেত পাঠান।

তবে তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার এবং এর জিই ইঞ্জিনে কোনও ত্রুটি পাওয়া যায়নি। এতে বোঝা যাচ্ছে, সমস্যাটি বিমানের যান্ত্রিক ব্যবস্থায় নয়, বরং ককপিটে জ্বালানি সুইচ অফ করাকে ঘিরেই।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সিবিএস নিউজের বিমান নিরাপত্তা বিশ্লেষক রবার্ট সামওয়াল্ট বলেন, এর ফলে বোঝা যাচ্ছে যে, বিমান বা ইঞ্জিনে নয়, বরং ককপিটেই কেউ ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে জ্বালানি বন্ধ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে—জ্বালানির সুইচ কি দুর্ঘটনাবশত বন্ধ করা হয়েছিল, না কি ইচ্ছাকৃতভাবে?’

এ প্রসঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, এআই১৭১ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। আমরা তদন্তের প্রতি পূর্ণ সহযোগিতা করছি এবং এএআইবি-এর প্রতিবেদন আমরা গ্রহণ করেছি।

বোয়িং কর্তৃপক্ষও এক বিবৃতিতে বলেছে, এআই১৭১ বিমানে নিহত যাত্রী, কর্মী ও তাঁদের পরিবারের প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। আমরা তদন্তে পূর্ণ সহায়তা করছি।

উল্লেখ্য, ১২ জুন আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশে যাত্রা করা এআই১৭১ ফ্লাইটটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। এতে ২৪২ যাত্রী ও ক্রুর মধ্যে মাত্র একজন বেঁচে যান। মাটিতে থাকা আরও ২৯ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডার নাগরিক।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন