শিক্ষা ডেস্ক:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত সব নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়তে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’ গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার পাদদেশে মানববন্ধন ও সমাবেশ করবে সংগঠনটি।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিছা পারভীন জলি।
তিনি জানান, যারা এই আন্দোলনকে পরিচালনা করতে দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের নিয়ে মঙ্গলবার পুর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেন, দুই বছর পেরিয়ে গেলেও নৈতিক স্খলনের দায়ে অভিযুক্ত মাহমুদুর রহমান জনির বিচার হয়নি। এর পেছনে মূল দায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি এই দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না।
দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল্লাহ ভূইয়া বলেন, আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে, যাতে এই প্রশাসন যে নিপীড়ক এবং নিপীড়কের দোসরদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে তা যেন না পারে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মো. জহির রায়হান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে হল সংলগ্ন পাশের জঙ্গলে নিয়ে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ভুক্তভোগী নারীর স্বামী আশুলিয়া থানায় ছয়জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়ছে।
গ্রেফতাররা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, একই বিভাগের সাগর সিদ্দিকী ও হাসানুজ্জামান এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান। তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
পলাতক আছেন- ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচিত মো. মামুনুর রশিদ এবং স্বামীকে আটকে রাখায় সহায়তা ও মারধর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মুরাদ। তাদেরকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৬ জনের সনদ স্থগিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়েছে। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সনদ স্থগিত হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, একই বিভাগের মুরাদ হোসেন, শাহ পরান, মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকী, মো. হাসানুজ্জামান ও এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসান। তাদের মধ্যে শাহ পরান ছাড়া সবাইকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে মুরাদ, সাব্বির ও মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।