জবি প্রতিনিধি :
ঈদের আগে চাঁদা না দেয়ায় সুমনা হাসপাতালের পরিচালক ইমাদুল উদ্দিন আহমেদকে গালিগালাজসহ হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন ফোন করে পরিচালককে এ গালিগালাজ করেন। শনিবার সুমনা মেডিকেলের পরিচালক ইমাদুল উদ্দিন আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, হাসপাতাল থেকে চাঁদা নেয়ার জন্য সুমনা হাসপাতালে জবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী বাবুকে পাঠান সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন ও রবিউল ইসলাম রবিকে পাঠান সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি। এরপর হাসপাতালের পরিচালক ইমাদুল উদ্দিন তাদের চাঁদা না দিলে পরে ফোনে সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন গালিগালাজসহ হুমকি প্রদান করেন। এ বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সুমনা হাসপাতালের পরিচালক ইমাদুল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগে এতো (চাঁদাবাজি) হয়নি। কমিটিতে আসার প্রথম থেকেই ওরা ডিস্টার্ব করে যাচ্ছে। মেহেদী বাবু ও কালো করে একটি ছেলেকে পাঠিয়েছিল। আকতারও ফোন দিয়ে গালিগালাজ করেছে। তাকে (আকতার) হয়তো অন্যভাবে বলেছে (বাবু)। এটা হিট ওফ মোমেন্টে করেছে হয়তো। আমরা এমনিই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় ছাড় দিই। তার উপর এসব খারাপই হয়।
কত টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, এমাউন্ট বলে নাই। চাঁদা চাইছিল। না দেয়ায় আকতার ফোন করে গালি দিয়েছে। পরে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি আমাকে ফোন দিয়ে কথা বলেছে, ওরা একটু নরম হয়েছে। মিমাংসার কথা বলেছে। এমনটা হতেই থাকে প্রায় প্রায়।
এ ঘটনায় কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ইমাদুল উদ্দিন আহমেদ শঙ্কা জানিয়ে আরো বলেন, এটা করলে হবে কি, এখানে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তো। দেখা যাবে পরে ঝামেলা করবে অন্য পোলাপান। এবিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে একাধিকবার ফোন করলেও পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, মেহেদী বাবু ঢাকাতে নেই। সে বাড়িতে। ইমাদ সাহেবের নাম্বার আমার কাছে নাই। কোন যোগাযোগও নাই। আমি ওনাকে ফোন করিনি। আমি এক-দেড় বছর সুমনাতে যাই না। জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, এবিষয়ে আমি কিছু জানি না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে চাঁদার কোন স্থান নাই। আমরা এগুলোর প্রশ্রয় দিই না। হয়তো আমাদের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি জবি ছাত্রলীগের কমিটির ঘোষণা করা হয়। ৬ মাস পর পুরান ঢাকায় চাঁদাবাজি, ক্যাম্পাসের সকল টেন্ডারে নিয়ন্ত্রণ নেয়া, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ ও নারী কর্মীদের রিসোর্টে নেয়ার মতো কেলেঙ্কারির ঘটনায় ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়। পরে কমিটির স্থগিত আদেশ তুলে নেয়া হয়। এরপর দেড় বছর আগে জবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও এবং নানা অভিযোগ উঠলেও নতুন কমিটি হয়নি রাজধানীতে ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিটে।