হোম জাতীয় জনবল সংকট, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র

জাতীয় ডেস্ক :

জনবল সংকট, পুরাতন ভবন আর নানা সমস্যায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র। মেডিকেল অফিসারের মূল পদটি দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় ভারপ্রাপ্ত দিয়েই দায়সারাভাবে কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। ৮টি পদের বিপরীতে অর্ধেক জনবল দিয়েই চলছে প্রতিষ্ঠানটি। চারজন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। দিনের বেশির ভাগ সময় তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়।

১৯৫৯ সালে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার টাউন ফুটবল মাঠের পাশে গড়ে উঠে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সুনামের সঙ্গে এলাকার মানুষের চিকিৎসা ও সেবাপ্রদান করে আসছিল। দেশ স্বাধীনের পর প্রতিষ্ঠানটি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আওতায় আসে। ভালো সেবা দেয়ায় প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ ও ২০১৯ সালে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কারও পেয়েছে।

এখানে স্বাভাবিক প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ২০টি শয্যা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি নানা সমস্যায় জর্জরিত থাকায় চিকিৎসা ও সেবা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ছে।

লোকবল সংকট, পুরাতন ভবন, স্টাফ কোয়ার্টার বসবাসের অনুপযোগী, অ্যাম্বুলেন্সটি বেহাল, দ্বিতল ছোট একটি ভবনে গাদাগাদি করেই চলছে চিকিৎসা ও সেবা কার্যক্রম। পুরাতন মেডিকেল সরঞ্জাম দিয়েই চলছে অপারেশন থিয়েটার। ওয়ার্ডের অবস্থাও বেহাল। সেবাপ্রদানকারীরাও অসহায় হয়ে পড়েছে।

মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র ৮টি পদের বিপরীতে রয়েছে অর্ধেক লোকবল। মেডিকেল অফিসার, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক, সহকারী নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদ শূন্য রয়েছে। মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২২ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত (১৪ মাসে) চিকিৎসা ও সেবা নিয়েছেন প্রায় ২৪ হাজার মানুষ।

রোগী ও তাদের স্বজনরা বলেন, এখানে চিকিৎসার মান ভালো। নামমাত্র টাকায় মা ও শিশুর সেবা পাওয়া যায়। সিজার করতে পারি বিনা খরচে। কিন্তু লোকবল সংকট থাকায় পর্যাপ্ত সেবা পাওয়া যায় না। দ্রুত সময়ে সেবার মান বৃদ্ধি করা হোক।

অন্তঃসত্ত্বা মায়ের সেবা, গর্ভোত্তর সেবা, সন্তান প্রসব, সিজারিয়ান, সাধারণ রোগী, আরটিআইএসটিডিআই, মেডিকেল চিকিৎসা, শিশু চিকিৎসা, কিশোর-কিশোরী সেবা, ইপিআই, টিউবেটটমি, ভ্যাসেকটমি, ইমপ্ল্যান্ট, কপার-টি, ইনজেকশন, খাবার বড়িসহ বিভিন্ন চিকিৎসা ও উপকরণ দেয়া হয়।

অ্যাম্বুলেন্সচালক বলেন, ২৫ বছর আগের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। ভোগান্তির শেষ নেই। রোগী নিয়ে বের হলে পথের মাঝে নষ্ট হয়ে যায়। অনেক আগে থেকেই শুনছি নতুন গাড়ি দেয়া হবে।

চুয়াডাঙ্গা মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. মো. বেলাল উদ্দীন বলেন, আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। রোগী এলে তো চিকিৎসা দিতেই হয়। আমাকে এখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়। মেডিকেল অফিসারের পদটি দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। সুইপার ও আয়া নেই। কেন্দ্রটি নিজেদের চেষ্টায় চালিয়ে রেখেছি। জনবল ছাড়া ভালো সেবা দেয়াটা কঠিন।

চুয়াডাঙ্গা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক দীপক কুমার সাহা জানান, মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের অবস্থা নাজুক। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নতুন ভবন ও আধুনিকায়ন সম্ভব হলে মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের পরিবেশ ও সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। এ কেন্দ্রটি বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন