অনলাইন ডেস্ক
প্রতি ঈদেই হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ডিউটি রোস্টার থাকে। সে অনুযায়ী তারা কাজ করেন। কোনও ঈদেই হাসপাতাল বন্ধ থাকে না, তবে রোগী কম থাকার কারণে কাজটা সীমিত হয়ে যায়। কিন্তু এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। কোভিড-১৯-এ থমকে গেছে বিশ্ব। বাংলাদেশেও দিনকে দিন বাড়ছে নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা, বেড়ে চলেছে মৃত্যু। তাই হাসপাতালগুলোতে এবারে থাকবে অন্য পরিবেশ। চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা একে মানসিকভাবে ‘অ্যাচিভ’ করে নিয়েছেন। চিকিৎসকরাও ঈদের দিনকে আলাদা করে কিছু অনুভব করছেন না।
কোভিড ডেডিকেটেড একাধিক হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এই সময়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছেন। ঈদের ছুটির কথা চিন্তা না করে বরং মহামারির এই সময়ে কী করে রোগীর সেবা করা যায় সেটাই তাদের কাছে মুখ্য। কেউ কেউ বৈশ্বিক এই মহামারিতে রোগীদের পাশে থাকাকে নিজের সৌভাগ্য বলেও ভাবছেন। নিজেদের ডেডিকেশন প্রমাণ করার সময় এটাই, বলছেন তারা।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবন এবং পুরাতন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটকে কোভিড আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সন্দেহজনক ও শনাক্ত রোগীদের জন্য ২৪০ করে বেড থাকার পাশাপাশি এইচডিইউ, সিসিইউ এবং আইসিইউ মিলিয়ে মোট শয্যার সংখ্যা ৫৫০টির মতো। এর বিপরীতে প্রতি সপ্তাহে কাজ করছেন ৮০ জন মেডিক্যাল অফিসার, আট জন সহযোগী এবং সহকারী অধ্যাপক এবং এর সঙ্গে রয়েছেন অধ্যাপকরা।
ঈদের রোস্টার শুরু হবে আগামী ২৩ মে থেকে জানিয়ে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া ডা. রাশিদুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চিকিৎসকরা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন আরও আগে থেকেই। আমাদের প্রস্তুতির অভাব নেই, ছুটিই চাননি কেউ।’
রাজধানীর কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর মধ্যে অন্যতম পুরান ঢাকার মহানগর হাসপাতাল। এ হাসপাতালের চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম মামুন গত দুই মাস ধরে কোভিড হাসপাতালে কাজ করছেন। ‘এ সময়ের মধ্যে কিছুটা অভ্যস্ত হয়ে গেছি’ মন্তব্য করে মামুন বলেন, ‘অন্যান্য বছরে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে বাসায় যাই, সবার সঙ্গে দেখা হয়। কিন্তু এবার সেটা হচ্ছে না। হাসপাতালে টানা ১০ দিন ডিউটি করে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে হোটেলে। এই সময়টাতে ভিডিও কল ছাড়া পরিবারের সদস্যদের দেখার আর কোনও সুযোগ নেই। কোয়ারেন্টিন শেষ করে ছয় দিনের জন্য বাসায় যেতে পারবো। তবে একই সঙ্গে নতুন আরেকটি অভিজ্ঞতা হচ্ছে। বলতে গেলে, কয়েকশ’ বছর পর এমন কোনও মহামারি আসে পৃথিবীতে। আর সেই মহামারিতে আমি সরাসরি রোগীর সেবা করতে পারছি এটাও অন্যরকম।’
বার্ন ইউনিট, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালঢাকা মহানগর হাসপাতালে বর্তমানে শয্যা সংখ্যা ৬৬টি। সেখানে বর্তমানে ৫১ জন রোগী রয়েছেন জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক প্রকাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘ঈদের সময়ে কারও ছুটি নেই। রোস্টার আগের মতোই চলবে।’