স্বপন কুমার রায় (দাকোপ) খুলনা
খুলনার দাকোপের লাউডোব (বাজুয়া) সাপ্তাহিক হাট বাজার মঙ্গলবার পূর্বে স্হানন্তর করা হলেও আজ হাটটি নিজস্ব জায়গায় বসেছে।করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে হাটটিকে জনসমাগম রোধ এড়াতে স্থান পরিবর্তন করে উপজেলা প্রশাসন বাজুয়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে স্হান্তান্তর করে। করোনা ভাইরাস এড়াতে জনসমাগম প্রতিরোধে হাটবাজারে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন উপজেলা প্রশাসন।লকডাউন কিছুটা শিথিল হলে আজ ৫ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল থেকে মনে হচ্ছে হাটবাজার তার প্রান ফিরে পেয়েছে, উপছে পড়া ভীড়, নেই কোন সামাজিক দুরত্বর বালাই মিলেমিশে একাকার হয়েগেছে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষের সাথে। উপজেলা প্রশাসন কৃষকদের কথা চিন্তা করে বহিরাগত ব্যাপারী, ট্রাক চালক ও ট্রলারের অনুমোদন দেন।যাতে করে ব্যাপারীরা তরমুজ নিয়ে অনায়াসে তাদের মোকামে নিয়ে বেচাকেনা করতে পারেন।
এসয় উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন খুলনার দাকোপের ৯ টি ইউনিয়নের মধ্যে বাজুয়া, দাকোপ, কৈলাশগঞ্জ, লাউডোপ ও বানীশান্তা ইউনিয়নে ব্যাপক হারে তরমুজসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষা কারকিত হয়েছে।
এ ছাড়া কামারখোলা, তিলডাঙ্গা, পানখালী এবং চালনা পৌরসভার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জমি এবার এই চাষাবাদের আওতায় এসেছে। সব মিলে দাকোপে এবার ১৫৩৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ, ১৫ হেক্টর বাঙ্গি, ৪০৮ হেক্টর সবজি, ৪০ হেক্টর সূর্যমুখী, ভুট্টা, মুগডাল, তিল এবং ৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদন হয়েছে। যা টাকার অংকে কেবল তরমুজ বিক্রি থেকে ৫ শত কোটি টাকা আয়ের আশা করা হচ্ছে। বিঘা প্রতি তরমুজের উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৬/১৮ হাজার টাকা, বিপরীতে ৪৫/৫০ হাজার টাকা বিক্রি হবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন চাষিরা। দেশে উৎপাদিত তরমুজের মধ্যে সুস্বাদু এবং ভাল ফলনের কারণে দাকোপের তরমুজের চাহিদা অপেক্ষাকৃত অনেক বেশী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন, একদিকে কৃষককে বাঁচাতে হবে অপরদিকে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ীর বৈধ কাগজপত্র, আইডি কার্ড এবং স্বাস্থ্য সনদ প্রদর্শনের শর্তে খুলনা সাতক্ষিরা বাগেরহাট যশোর এলাকার পরিবহন গাড়ী ও ড্রাইভারদের এখানে আসার অনুমতি দিয়েছি। অনুরূপ শর্তে একই অঞ্চলের ক্রেতা বা ব্যাপারীদের দাকোপে এসে তরমুজ কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য বহিরাগতদের মধ্যে কেউ যদি তরমুজ চাষাবাদের সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট থাকে তাদেরকে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কৃষকরা আশাবাদী ন্যায্যমূল্য পেলে উৎপাদন খরচের দ্বিগুণ ব্যবসা হবে। অনেকে আবার বিভিন্ন সমিতি অথবা মহাজনি সুদে টাকা নিয়ে চাষাবাদ করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান খান বলেন, দেশে অন্যান্য নিত্যুপণ্য বিপণন ও পরিবহন যদি চলমান থাকতে পারে তবে কেন কৃষি পণ্য পারবেনা ? তিনি অর্থনৈতিক বৃহত্তর স্বার্থে যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনে ব্যাপারীদের দাকোপে আসার সুযোগ দেওয়া উচিত মন্তব্য করে বলেন অন্যথায় চাষিরা পথে বসে যাবে। তবে এলাকাবাসীর ভাষ্য সবার আগে ভাবতে হবে সার্বজনীন মানুষের নিরাপত্তা।
এদিকে খুলনা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ এর নির্দেশক্রমে দাকোপ থানা পুলিশের , অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পানখালী ও পোদ্দারগঞ্জ ফেরিঘাটে দুর দুরন্ত থেকে আসা তরমুজ বহনকারী ট্রাক ড্রাইভারদের ও তরমুজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত পর্ণ পরিবহন রোধকল্পে, নির্বঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করার জন্য দাকোপ থানা পুলিশের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট