হোম অন্যান্যসারাদেশ খুলনার কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলে চরম ভোগান্তিতে বসবাসকারিরা

খুলনার কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলে চরম ভোগান্তিতে বসবাসকারিরা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 175 ভিউজ

খুলনা অফিস :

খুলনার বয়রা কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলে বসবাসকারিদের দুর্ভোগের সীমা নেই। পানি, টয়লেট সংকট, ভাঙাচোরা ভবন, বিদ্যুৎ সহ নানা সমস্যার মধ্যে থাকতে হয় তাদের। ভাড়াটিয়াদের অভিযোগ, মেইনটেনিং না থাকায় অসুবিধায় ভোগেন তারা। পানির ট্যাঙ্কটি পরিস্কার করা হয়না বছরের পর বছর। হোস্টেলের একমাত্র টিউবওয়েলের চারপাশে ময়লার স্তুপ। ফাটল দেখা দেয়ায় হোস্টেল ভবনটি থেকে পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। ১৫০ জনের ডাইনিং রুমে টেবিল দ’ুটি আর চেয়ার মাত্র ৫টি। হোস্টেলের অধিকাংশ রুমে কোন ফ্যান নেই, গরম মৌসুমে নিজস্ব টেবিল ফ্যানই ভরসা। এ অবস্থায় প্রতি বছর বাড়ে ভাড়া। কিন্তু সেবার মান বাড়ে না হোস্টেলটিতে।

হোস্টেল সূত্রে জানা গেছে, খুলনার একমাত্র কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলে ১৫০টি সিটের সবগুলোই পূর্ণ। ৩ বেড ও ৪ বেডের রুমে সিট ভাড়াও প্রায় হাজার টাকা। বিছানার প্রস্থ এক হাতের বেশী হবে না। প্রতি রূমে থাকেন ৩ থেকে ৪জন। প্রতি ২বেডের মাঝে একটি করে টেবিল তাতে আবার দ’ুজন অংশীদার। ভবনটির প্রথমেই ঢুকতে রয়েছে বিশাল ডাইনিং রুম। কিন্তু ১৫০জন নারীর খাবারের জন্য টেবিল মাত্র ছোট ছোট ২টা, চেয়ার ৪/৫টা। ফলে খাওয়া দাওয়ার কাজটি সারতে হয় নিজ রুমে।

গরমের দিনে বোর্ডারদের সমস্যা প্রকট। রুমের ফ্যানগুলোর অধিকাংশই নষ্ট। বর্ষায় পানি জমে থাকে বারান্দায় এবং ভবনের ভিতরে বিভিন্ন জায়গায়। দীর্ঘদিন পরিস্কার না করার কারনে ট্যাংকির পানি পোকামাকড়ে পরিপূর্ণ। খাবার পানির জন্য একটি টিউবওয়েল থাকলেও চারপাশে ময়লা আবর্জনায় ভরা। হোস্টেল ভবনটির অবস্থা খুবই খারাপ। ছাদ আর পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে পানি। যে কোনো সময় হতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। অনেক দিন যাবত মেরামত কাজ না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। এদিকে বেশিরভাগ কক্ষের দরজায় কোনো সিটকিনি নেই। এর মধ্যে ৩য় তলার অবস্থা বেশি খারাপ। ফলে অপরিষ্কার এবং দুর্ঘটনার আশংকায় থাকতে হচ্ছে সেখানে বসবাসরত নারীদের। এভাবেই চলে এখানকার নারীদের জীবনযাপন।

হোস্টেলে বসবাসরতদের অভিযোগ, এখানে খাবারের মান অত্যন্ত নিন্ম। কাপড় ধোয়ার জন্য ভালো জায়গা নেই। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য হোস্টেলে আয়া বরাদ্দ থাকলেও প্রতিমাসে অথবা প্রতি সপ্তাহে নিজেরা টাকা দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করাতে হয়। হোস্টেল কর্তৃপক্ষ গেটে নিরাপত্তা কর্মী রাখেনি। কমন রুমের অবস্থা খুবই খারাপ। দৈনিক পত্রিকা রাখার নিয়ম থাকলেও রাখা হয় না। প্রতিমাসের ১ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে সিট ভাড়া দিতে না পারলে ২০টাকা জরিমানা দিতে হয়। প্রতি মাসে বাধ্যতামূলক বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২০০ টাকা হারে হোস্টেলে জমা দিতে হয়। প্রতি ডিসেম্বরে পানির বিল বাবদ ২০টাকা হারে এবং সিটের আরো ৫০টাকা বাড়িয়ে দিতে হয় বছর শেষে।
হোস্টেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৮৭ সালে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের আওতায় খুলনা নগরের বয়রায় কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলটি স্থাপিত হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে তা সরকারীকরণ করার ঘোষণা থাকলেও তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। পরবর্তী সময়ে হোস্টেল সুপার (অতিরিক্তি দায়িত্ব) ও খুলনা জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নার্গিস ফাতেমা ১২ জনের পদ সৃষ্টির লিখিত প্রস্তাব দেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন