হোম অন্যান্যসারাদেশ খাগড়াছড়িতে টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের শঙ্কা, চেঙ্গী নদীতে ভেসে এলো মরদেহ

খাগড়াছড়িতে টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের শঙ্কা, চেঙ্গী নদীতে ভেসে এলো মরদেহ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 57 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:
অবিরাম ভারী বর্ষণ ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দীঘিনালা-লংগদু সড়কের হেডকোয়ার্টার এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ার রাঙামাটির লংগদুর সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি পাহাড়ধসের শঙ্কায় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে প্রায় তিন হাজার পরিবার। এরই মধ্যে খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে চেঙ্গীনদী দিয়ে ভেসে আসা একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (৯ জুলাই) বেলা ৩টার দিকে মহাজন পাড়ার নিকটবর্তী এলাকায় চেঙ্গীনদী থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।

মহালছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, চেঙ্গীনদীতে ভেসে আসা একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে।

এদিকে টানা ভারী বর্ষণে দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে মেরুং ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠতে শুরু করে। এতে চিটাইগ্যাংয়া পাড়া বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ মেরুং বাজারের লাগায়ো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন। দীঘিনালা-লংগদু সড়কের হেডকোয়ার্টার এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ার রাঙামাটির লংগদুর সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে মেরুং বাজার ডুবে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

দীঘিনালা দ্বিতীয় শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের বেলুন মেকার সূভূতি চাকমা বলেন, ‘বুধবার বিকেল পর্যন্ত ১০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে।’

বৃষ্টিতে সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কের কয়েকটি এলাকায় মাটি ধসের ঘটনা ঘটেছে। খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কে কয়েকটি স্থানে সড়কের মাটি ধসে গেছে। সড়ক বিভাগের কর্মীরা গিয়ে মাটি সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।’

খাগড়াছড়ি পৌর শহরের শালবন, কুমিল্লাটিলা, সবুজবাগ বিভিন্ন এলাকায় ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে স্থানীয়রা। পাহাড়ধসের শঙ্কায় রয়েছে সাড়ে তিন হাজার পরিবার।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখানে তিন দিন ধরে টানা বর্ষণ হচ্ছে। মাইনী নদীর পানির প্রবাহ বেড়ে মেরুংয়ের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টির এখন যে পরিস্থিতি তাতে রাতের মধ্যে আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হবে। অনেকগুলো পরিবার ছোট মেরুং বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে।

খাগড়াছড়ির নিচু এলাকা প্লাবিত, দীঘিনালা-লংগদুর সড়ক যোগাযোগ বন্ধখাগড়াছড়ির নিচু এলাকা প্লাবিত, দীঘিনালা-লংগদুর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ
মেরুং ইউনিয়ন নারী ইউপি সদস্য ঝমিলা খাতুন বলেন, ‘আমাদের নিচু এলাকা গত জুনের শুরুতেও ডুবেছে। এবারও একই অবস্থা। বৃষ্টি বাড়ছে। নদীতে পানি বাড়লে আমাদের মেরুং বাজারও ডুবে যাবে। ইতোমধ্যে ৫০ পরিবার ছোট মেরুং বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। আরও আসতেছে। তাদের জন্য সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।’টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা প্রশাসন। জেলা সদরে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এদিকে প্রাণহানি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করেছে জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। তিনি বলেন, ‘আমি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। অনেকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। যেহেতু টানা বৃষ্টি হচ্ছে, পাহাড় ধসের শঙ্কা আরও বেশি। পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে গেছে। কিন্তু বারবার অনুরোধ করার পরও তারা বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে না। আশ্রয়কেন্দ্রে আমরা গরম খাবার দিচ্ছি। খাবার নিয়ে তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। আমরা প্রচুর চেষ্টা করছি কিন্ত বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে না।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন