হোম অন্যান্যসারাদেশ কেশবপুরে এলজিইডির খননকৃত খালে পাউবো‘র ৪৩ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ, উত্তেজিত কৃষক

জয়দেব চক্রবর্তী,কেশবপুর (যশোর):

যশোরের কেশবপুরে বগার খাল ২০২২ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়। চলতি বছর একই খাল খননে পানি উন্নয়ন বোর্ড পুনরায় প্রায় ৪৩ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে। যা হরিলুট ছাড়া আর কিছুই না। গত ৯ জুলাই খাল খননে পানি উন্নয়ন বোর্ড নাম ফলক স্থাপন করতে যায়। খননকৃত খাল পুনরায় খনন না করার দাবিতে শত শত কৃষক ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। । খাল খননের নামে হরিলুট বন্ধের দাবিতে গত ২৮ মে বগা পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির লিমিটেডের সভাপতি স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের বগা খালটি ২০০১ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন সেক্টর প্রকল্পের নীতিমালা মোতাবেক বগা পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির লিমিটেডের কাছে ব্যবহারের জন্যে ন্যস্ত করা হয়। প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী খালটি এলজিইডির সহায়তায় সমিতি নির্মিত অবকাঠামো সমূহ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এলজিইডি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে খালের ৯‘শ মিটার খননসহ ২০২৩ সালে সমিতির অফিস ঘর নির্মাণ সম্পন্ন করে। চলতি বছর এলজিইডির ওই খাল খননে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ৪৩ লাখ টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।

বগা পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির লি: সভাপতি আসাদুজ্জামান বলেন, বগা খালের আশপাশে কৃষকের ১ হাজার ২৯০ হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে। বিলে বোরো, পাট, আমন ও সবজির আবাদ হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড অসৎ উদ্দেশ্যে গত এপ্রিলের শেষে বগা স্লুইস গেটের জলকপাট অপসারণ করে। এরফলে কপোতাক্ষের লোনা পানিতে এলাকার কৃষক আবুল কাশেমের ৬ বিঘা, আসাদুজ্জামানের ৩ বিঘা, নিজামউদ্দীনের ২ বিঘা, তরিকুলের ২ বিঘাসহ কমপক্ষে ২০ হেক্টর জমির আবাদকৃত পাট, ২ হেক্টর জমির সবজি খেত নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া, এলাকার কৃষকরা বগার খালে পাট পচন দিয়ে থাকে। এই মুহূর্তে খাল খনন হলে শত শত কৃষকের পাট জাগ দেয়া নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে। খননকৃত খাল পুনর্খনন মানে হরিলুট ছাড়া আর কিছুই না। এমতাবস্থায় তিনি খনন কাজ বন্ধের দাবি জানান। এনিয়ে কৃষকদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপরও গত ৯ জুলাই কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলী ইউসুপ আলী বগার খাল খননের জন্যে স্লুইস গেটের
সামনে উদ্বোধনের নাম ফলক নিয়ে গেলে সেটা ভেঙ্গে দেয়।

বগা পানি সমিতির সভাপতির পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে এলজিইডি যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শরিফুল ইসলাম খনন কাজ বন্ধে গত ২৯ মে পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোর পউবোর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে পত্র দিয়েছেন। তিনি পত্রে উল্লেখ করেন, ১৯৯৭ সালে পাউবো বগার খালটি এলজিইডির কাছে হস্তান্তর করে। এরপর থেকে খালটির রক্ষণাবেক্ষণসহ সকল দায়িত্ব স্থানীয় পানি সমিতির কাছে ন্যস্ত করা হয়। খালটি খননেও এলজিইডি সহযোগিতা করে আসছে। এরপরও এলজিইডিকে অবহিত না করে যশোর পও র বিভাগ স্লুইস গেটের জলকপাট, গিয়ার বক্স অপসারণ করায় তা অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। খালটি গত বছর খনন করা হয়েছে। বিধায় নতুন করে পুনর্খননের প্রয়োজন নেই।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কেশবপুরের উপসহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ আহমেদ বলেন, কপোতাক্ষ নদ খনন প্রকল্পের ২ পর্যায়ে বগার খালটি খননের উদ্যোগ নেয়া হয়। কাদার খাল ও বগার খাল খননে ৮৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খাল মাপার সময় জনগণ বাধা দেয়নি। সকল কাজ সম্পন্নের পর এখন বাধা দিচ্ছে। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর খাল খননের ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কাদার খাল খনন সম্পন্ন হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন