আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে বিভক্তকারী কাশ্মির সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। বিভক্ত অঞ্চলটিতে আইইডি বিস্ফোরণে দুই ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার দুই দিন পর এমন ঘটনা ঘটল।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের সময় উপমহাদেশ থেকে কাশ্মীর ভাগ হওয়ার পর থেকে অঞ্চলটি নিয়ে উত্তেজনা চলছে। ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই কাশ্মিরের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ দাবি করে। হিমালয় অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুটি যুদ্ধ এবং অসংখ্য ছোট ছোট গোলাগুলি হয়েছে তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম পিটিভি জানিয়েছে, বুধবারের ঘটনায় দুই সেনা ও দুই বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এনডিটিভিকে বলেছেন, পাকিস্তানি সেনারা বিনা উস্কানিতে গুলি চালালে ভারতীয় বাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়।
এএফপির অনুরোধে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারাও মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি।
২০০৩ সালে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সই হওয়া একটি সীমান্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। তবে উভয়ই মাঝে মাঝে একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
গত মাসে ভারতীয় সেনাবাহিনী বলেছিল, তাদের সৈন্যরা কাশ্মির সীমান্ত অতিক্রম করে ভারত নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টাকালে দুই বিদ্রোহী যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।
স্বাধীনতা বা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার দাবিতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটিতে বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী জন্ম নিয়েছে। তারা ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে। দীর্ঘ এই সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদির সরকার ‘আংশিক স্বায়ত্তশাসন’ বাতিল করে নয়াদিল্লির কাছ থেকে অঞ্চলটির সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে লড়াই কিছুটা কমেছে। বিদ্রোহীদের ধারাবাহিক হামলায় তিন বছরে ৫০ জনেরও বেশি সৈন্য নিহত হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকায় কয়েক হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে ভারত।
ভারত নিয়মিতভাবে পাকিস্তানকে দোষারোপ করে, তারা তাদের সীমান্ত পেরিয়ে বিদ্রোহীদের ভারতীয় বাহিনীর উপর আক্রমণ চালাতে সতায়তা দিচ্ছে। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা কেবল কাশ্মীরের আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রামকে সমর্থন করে।