হোম জাতীয় করোনা ঝুঁকিতে পথশিশুরাই বেশি

করোনা ঝুঁকিতে পথশিশুরাই বেশি

কর্তৃক
০ মন্তব্য 142 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক :

করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বিশ্বের সব মানুষ। কোভিড-১৯ যেকোনও সময়, যে কারও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে চলার জন্য বলা হলেও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য তা অনেকাংশেই সম্ভব হয়ে উঠছে না। আর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুরা। নগরীর বিভিন্ন বস্তি, রেলস্টেশন এলাকায় এদের বিচরণ। এসব শিশু বেশিরভাগ সময় দলবদ্ধভাবে চলাফেরা ও বসবাস করে। তবে এদের বেশিরভাগেরই নেই কোনও সুনির্দিষ্ট আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থা। করোনা পরিস্থিতিতে এদের জীবনধারণ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। পথশিশুদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে এদের জন্য তেমন কোনও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা (সেভ দ্য চিলড্রেন) বিষয়টি জানেন না।

দেশে আনুমানিক ৭-৮ লাখ পথশিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন। আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশে কী পরিমাণ পথশিশু রয়েছে তা সার্ভে করা ছাড়া বলা সম্ভব না।

শনিবার (৯ মে) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, জিগাতলা, কলাবাগান, শ্যামলী, মহাখালী, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পথশিশুরা সড়কের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান নিয়েছে। কোথাও দেখা গেছে তারা দলবদ্ধভাবে খেলছে, আবার কোথাও খাবারের জন্য রাস্তায় গাড়ি থামলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। কোনও গাড়ি থেকে খাবার মিলছে, আবার মিলছে না। ঝুঁকি নিয়েই তারা প্রধান সড়কের এপাশ থেকে ওপাশ দৌড়াদৌড়ি করে বেড়াচ্ছে। আবার কোথাও এক প্যাকেট খাবার নিয়ে তাদের কাড়াকাড়ি করতেও দেখা গেছে।

মহাখালীর ফ্লাইওভারের নিচে কথা হয় শিশু আবিদের সঙ্গে। করোনা পরিস্থিতিতে নিজের অবস্থার কথা সে জানায় বাংলা ট্রিবিউনকে। বলে, ‘সারাদিন এলাকাতেই থাকি। ওই রেললাইনের পাশে একটি ছোট ঝুপড়ি ঘরে আমার সঙ্গে মা আর বইন থাকে। রাস্তায় দাঁড়াইলে অনেক সময় কেউ খাওন দেয়, আবার দেয় না। মায়ে অসুস্থ, এই খাওন না পাইলে অনেক সময় না খাইয়া থাকতে হয়। ইফতারের আগে সইন্ধ্যাবেলা অনেকেই খাওন দেয়। খাওন পাইলে সেইটা ঘরে নিয়া মা আর বইনরে লইয়া খাই।’

কাওরান বাজারে কথা হয় অপর এক পথশিশু রাতুলের সঙ্গে। রাতুল বলে, ‘রাতে অনেকেই খাওন দিতে আসে। খাওনের লাইগ্যা অপেক্ষা করি। কোনও কোনও দিন খাওন নিয়া আসে, আবার কোনও দিন আসে না। এভাবেই চলতাছে।’

পথশিশুদের কথা চিন্তা করে অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদেরকে খাবার পৌঁছে দিতে কাজ করছেন। যার যতটুকু সাধ্য তা দিয়ে চেষ্টা করছে পথশিশুদের পাশে থাকতে। অনেকে বাড়িতে রান্না করা খাবারও প্যাকেট করে পৌঁছে দিচ্ছে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে।

এমনই একজন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সিনিয়র লেকচারার কাজী তাহমিনা। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের এই সাধারণ ছুটির সময়টাতে ঘরে বসেই সময় কাটাচ্ছি আমরা। তাই আমি এবং আমার স্বামীর উদ্যোগে বাসায় রান্না করা খাবার পথশিশুদের মধ্যে বিতরণে কাজ করছি। আমার এই উদ্যোগ দেখে আমার আত্মীয়স্বজনও এতে সম্পৃক্ত হয়েছে। তারাও আমাকে অর্থ সহায়তা করছে, পথশিশুদের খাওয়ানোর জন্য। প্রতিদিন আমি প্রায় ৩৫-৪০ জন পথশিশুর খাবার রান্না করি। থাকি। দুর্যোগের শেষ সময় পর্যন্ত আমি চেষ্টা করে যাবো।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন