হোম অন্যান্যলাইফস্টাইল এই গরমে ঘুরতে যেতে পারেন যেসব জায়গায়

 লাইফস্টাইল ডেস্ক :

গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। এই গরম থেকে বাঁচতে একমাত্র ভরসা বাতানুকূল যন্ত্র। তা-ও শুধু বাড়িতে কিংবা অফিসে থাকলে। বাকি সময় ঘেমেনেয়ে একাকার অবস্থা। এ সময় ছুটিতে বাইরে যাওয়ার কথাও মাথায় আছে। কোথায় যাবেন? ভ্যাপসা গরমে ঠান্ডার খোঁজে কোথায় যাওয়া যায়। এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে আপনার নাজেহাল অবস্থা। তাই এই গরমে ঠান্ডার খোঁজে যেতে পারেন যেসব জায়গায়–

সিলেটের পাংথুমাই

সমগ্র বাংলাদেশের গ্রামগুলোর সৌন্দর্যের মধ্যে যদি তুলনা করা হয় তাহলে সবার ওপরে থাকবে সিলেটের পাংথুমাই। জাফলং ইউনিয়নের সীমানায় গ্রামটি গাছের সবুজ, মেঘের ধূসর এবং জলপ্রপাতের চঞ্চলতার মেলবন্ধনে যেন এক অপরূপ নিসর্গ। খুব জোরে বাতাস বয়ে গেলে অপার্থিব গোঙানি গ্রামের শেষে গুহার উপস্থিতির জানান দিয়ে যায়।

ভোলার মনপুরা

শহরের কোলাহল ও দাবদাহ থেকে এক নিমেষেই মুক্তি দিতে পারে মনপুরা। ভোলা জেলার নদী ও সাগরের মিলনস্থলে এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা। এখানকার পিন-পতন নীরবতায় এক সূর্যাস্ত অথবা তারা ভরা রাতের শামিয়ানা এক জীবন্ত রূপকথার আমেজ দেবে।

সিলেটের জাফলং

খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে পিয়াইন নদী ঘেরা জাফলং যেন প্রকৃতির এক স্বপ্নিল খেয়াল। আনমনে কোনো শিল্পী যেন তার নিপুণ হাতে এঁকে দিয়েছেন পাহাড়ের খাঁজে খাসিয়াপল্লি, পানির নিচের পাথর, আর পানের বরজ। কাছেই সংগ্রামপুঞ্জির রাস্তা ধরে এগোলে দেখা মিলবে দেশের প্রথম সমতল চা বাগান।

নেত্রকোনার বিরিশিরি

চীনামাটির পাহাড় ঘেরা অপরূপ নীল হ্রদ দেখতে হলে যেতে হবে দুর্গাপুরের এই ঐতিহ্যবাহী গ্রামটিতে। হ্রদের নীল পানির ধারা শুরু হয়েছে সমেশ্বরী নদী থেকে। আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে রানীখং গির্জা, কমলা রানীর দিঘি, পাহাড়ি কালচারাল একাডেমি, হাজংদের কিছু স্মৃতিস্তম্ভ এবং সেন্ট যোসেফের গির্জা।

সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারির আশ্রয়স্থল এই জায়গাটির অবস্থান ধলাই নদের উৎসমুখে। সাদা পাথর ছাড়াও এখানে দেখা যাবে রোপওয়ে, উৎমাছড়া ও তুরুংছড়া।

নারায়ণগঞ্জের পানাম নগর

ঢাকার কাছেই এই ঐতিহাসিক জায়গাটি ঢাকার ভ্রমণপিপাসুদের কাছে সেরা দর্শনীয় স্থান। ৪০০ বছরের পুরোনো টাকশাল বাড়ি ও নীলকুঠি দেখার সময় মনে হবে সময়টা ঘুরে অতীতে চলে গেছে। এ ছাড়াও আছে লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, গোয়ালদি মসজিদ, পান্থশালা, খাজাঞ্চিখানা, চিত্রশালা, দরবার কক্ষ ও গুপ্ত পথ।

কুমিল্লার ময়নামতী

লালমাই পাহাড়, শালবন বিহার, বৌদ্ধমন্দির, ময়নামতী জাদুঘর একসঙ্গে ঘোরা যাবে কুমিল্লা কোটবাড়ির ময়নামতী গেলে। কুমিল্লার খাদি কাপড় ও রসমালাইয়ের সুখ্যাতি দেশের বাইরেও ছড়িয়ে আছে। শালবন বিহার ও ময়নামতী জাদুঘর সরকারি ছুটির দিন ও রোববার বন্ধ থাকে, আর সোমবারে বন্ধ থাকে অর্ধদিবস।

মুন্নার

কেরলের মুন্নার পশ্চিমঘাট পর্বতমালার অন্যতম জনপ্রিয় শৈলশহর। পাহাড়ের মধ্যে বিস্তৃত চা-বাগানের সৌন্দর্যের জন্য ব্রিটিশ আমল থেকেই মুন্নারের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। মুন্নারের এরাভিকুলাম জাতীয় উদ্যান বেশ কিছু বিরল পশুপাখির আবাস। পাশাপাশি এখানে রয়েছে আত্তুকাদ, লক্কম, নাইনাক্কাডুর মতো বিখ্যাত সব জলপ্রপাত।

সোলাং ভ্যালি

হিমাচল মানেই সিমলা, কুলু, মানালি নয়। মানালি থেকে লেহ-মানালি হাইওয়ে ধরে রোটাং পাস যাওয়ার পথে ১৪ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সোলাং ভ্যালি। হিমাচল প্রদেশের আকর্ষণীয় জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম। সমুদ্রতল থেকে ৮ হাজার ৪০০ ফুট উঁচুতে এর অবস্থান। রোটাং পাস খোলা থাক বা না থাক, ফেরাবে না সোলাং ভ্যালি। সবসময় জমজমাট থাকে এই উপত্যকা। কুলু জেলার সোলাং ভ্যালি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য। পাহাড়ের চূড়া ছুঁয়ে ঘন জঙ্গলের মাথার ওপর দিয়ে প্যারাগ্লাইডিং করে ডানা মেলে পাখির মতো ওড়ার মজাই আলাদা। এ ছাড়াও রয়েছে ট্রেকিং, ক্যাম্পিং করার সুযোগ।

কুর্গ

পশ্চিমঘাট পর্বতের ঢালে কোদাগু জেলায় পাহাড়ঘেরা এক অনন্ত স্বপ্নের, যার নাম কুর্গ। তার শরীরজুড়ে সবুজের আধিক্য এবং কাবেরীর স্পন্দন। ইদানীং টুরিস্ট স্পট বাছতে গিয়ে বাঙালি কর্ণাটকের এই মনোরম জায়গাটিতে একটু বেশিই ‘টিকমার্ক’ বসাচ্ছে। উঁচুনিচু পাহাড়, আঁকাবাঁকা পথ, বিরামহীন ছোট-ছোট ঝরনা, নদী, একরের পর একর জমিতে কফি চাষ—শহুরে কোলাহলের বাইরে যেন এক টুকরো স্বর্গ। মিলবে রিভার রাফটিং, জিপলিং, ট্রেকিং ও কায়াকিং-এর সুযোগ।

পঞ্চগনি

গরমে স্বস্তির খোঁজ করতে চাইলে আপনার গন্তব্য হতে পারে মহারাষ্ট্রের পঞ্চগনি। মুম্বাইয়ের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে এই শৈলশহরের অবস্থান। মহাবালেশ্বর থেকে যেতে সময় লাগবে প্রায় আধঘণ্টা। দুপুরের দিকে রোদ ঝলমলে পাহাড়ের দৃশ্য আর সন্ধ্যা নামলেই হালকা হিমেল হাওয়া! ঘুরে আসতে পারেন ধুম ধাম লেক, পারসি পয়েন্ট, সিডনি পয়েন্ট, টেবলল্যান্ড, লিঙ্গমালা ঝরনা।

উটি

তামিলনাড়ুর নীলগিরি পাহাড়ের কোলে অবস্থিত উটিও ব্রিটিশ আমল থেকেই দক্ষিণাত্যের অন্যতম জনপ্রিয় একটি শৈলশহর। উটির আসল নাম উধাগমণ্ডলম। পাইনের বন, চা-কফির বাগান আর মেঘে ঘেরা উটিতে রয়েছে একাধিক লেক, জলপ্রপাত ও বোটানিক্যাল গার্ডেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন