আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে প্রায় ৩০ জন নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েল। তাদের মধ্যে প্রায় সবাই ইহুদি। নয়টি গোপন কক্ষ থাকে তাদের গ্রেপ্তারের ঘটনাটি দেশটিতে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এটিকে চিরশত্রু ইসরায়েলে কয়েক দশকের মধ্যে ইরানের সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চারটি ইসরায়েলি নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ৩০ জনই ইসরায়েলের নাগরিক।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী শিন বেট জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের লক্ষ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল – একজন ইসরায়েলি পরমাণু বিজ্ঞানীসহ সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা। আর একটি দল সামরিক ঘাঁটি ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছিল।
চার জন সাবেক সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, গত দুই বছর ধরে সাধারণ ইসরায়েলিদের অর্থের বিনিময়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও হামলা চালানোর জন্য ইরানি গোয়েন্দারা বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে নতুন করে তাদের গ্রেপ্তার করা হলো।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
অন্তত দু’জন সন্দেহভাজন ইসরায়েলের আল্ট্রা-অর্থোডক্স ইহুদি বলে জানিয়েছে পুলিশ ও শিন বেট।
আদালতের রেকর্ড ও দাপ্তরিক বিবৃতির সঙ্গে কথোপকথনে দেখা গেছে, আগের দশকগুলোতে ইরানি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযানে একজন উচ্চপদস্থ ব্যবসায়ী ও সাবেক মন্ত্রীকেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
নতুন গুপ্তচররা ইসরায়েলি সমাজের প্রান্তিক মানুষ বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে অভিবাসী, সেনাবাহিনী থেকে পলাতক এবং একজন দোষী সাব্যস্ত ‘যৌন অপরাধী’ও আছেন। তারা দেয়ালে নেতানিয়াহু বা সরকারবিরোধী গ্রাফিতি স্প্রে করা এবং গাড়ি ভাঙচুর করতো।
ইসরায়েল গত কয়েক বছরে তার আঞ্চলিক শত্রু ইরানের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধে বড় ধরনের ‘গোয়েন্দা সাফল্য’ অর্জন করেছে। যার মধ্যে একজন শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
ইসরায়েলের একজন সক্রিয় সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, সাম্প্রতিক গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল এখন পর্যন্ত তেহরানের পাল্টা জবাব দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। লেবাননে হিজবুল্লাহর ওপর হামলা এবং সিরিয়ায় তেহরানের মিত্র সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের কারণে ইরান অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে।