রাজনীতি ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গায়ে পড়ে ভারতের সঙ্গে তিক্ততা তৈরি করে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। ইন্ডিয়া আউট বলে সম্পর্ককে বৈরিতার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সমীচীন নয়।
তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের প্রভাব ভারতেও পড়েছে, ভারতে জিনিসপত্রের দাম কম, বাংলাদেশে বেশি বিষয়টা তো এমন নয়। যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে তখন একটি মহল ভারতবিরোধী প্রচারণা চালানো শুরু করে।
শনিবার (১৬ মার্চ) ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির দ্বি-বার্ষিকী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের বলেন, ‘সম্পর্ক ভাল বলেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনা করে ৬৮ বছরের সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছেন। আমি এই কৃতিত্ব দিবো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীকে। দীর্ঘ দিনের অবিশ্বাস ও সন্দেহের দেয়াল তারা ভেঙ্গে দিয়েছেন। অবিশ্বাস ও সন্দেহের দেয়াল রেখে কোনো কিছু সমাধান সম্ভব নয়। আজকে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির বিষয়ে, গঙ্গা চুক্তিও আমরা করেছি। তিস্তা নদী নিয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে এবং এর সমাধানও অবশ্যই হবে।’
‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১টা বছর বাংলাদেশে কারা শাসন করেছিল? সেই সময় তারা প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বৈরিতা তৈরি করেছিলো— সেই কারণেই আমাদের দীর্ঘদিনের অনেক সমস্যা তৈরি হয়। সম্পর্ক যদি ভালো থাকে তবে আলোচনার টেবিলে যেকোনো বড় সমস্যা আমরা সমাধান করতে পারি, তার মধ্যে ছিটমহল বিনিময়, সীমান্ত সমস্যা সমাধান। যে দেয়াল তৈরি হয়েছিল ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সেই দেয়াল শেখ হাসিনা-মোদি ভেঙে দিয়েছেন।’
এ সময় সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মাইনোরেটি ভাবনাটাই একটা দাসত্বের শিকল, এই দাসত্বের শিকল ভেঙে দিতে হবে। মুসলমানের ভোট বা হিন্দুর ভোটে কোনো পার্থক্য আছে? মুসলমানের একটি ভোটের যে মূল্য হিন্দুর একটি ভোটেরও একই মূল্য। সংবিধান সাম্প্রদায়িক নয় তাই কোনো পার্থক্য নেই। তবুও কেনো আপনারা মাইনোরেটি কমপ্লেক্সে ভুগবেন?’
‘যারা মন্দিরে হামলা করে, যারা হিন্দু ভাইদের ওপর হামলা করে এবং তাদের জমি দখল করে, এদের যদি রাজনৈতিক পরিচয় থেকেও থাকে তাদের আসল পরিচয় এরা দুর্বৃত্ত। এরা আমাদের শত্রু, এরা দেশের শত্রু।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্রাইসিসের যোগ্য ম্যানেজার। আমরা কি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি তা আপনারা জানেন। আপনাদের অনেক দাবি এখনো পূরণ হয় নাই আমরা জানি। ঢাকেশ্বরীর ১.৫ বিঘা জমি শেখ হাসিনার উদ্যোগেই উদ্ধার ও বিল্ডিং করা হয়েছে। যেগুলো বাকি আছে সেইগুলো আবার করে দেয়ার ইচ্ছা আছে।’
‘আমরা আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বেদখল যায়গায় আইনি যেই সমস্যাগুলো রয়েছে তার সমাধান আমরা করবো। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবো।’
এ সময় মন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, ‘২০০১ সালের পর মনেহয় যেনো ৭১ সাল ফিরে এসেছিল। তারা চেয়েছিল হিন্দুদের এ দেশ থেকে বের করে দিতে হবে। শেখ হাসিনার সরকার মাইনরিটি বান্ধব সরকার। এই সরকার যতদিন আছে, আমরা আপনাদের পাশে আছি পাশে থাকবো। স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া দরকার।’
চলমান দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘সিন্ডিকেট নিয়ে প্রতিনিয়ত সাংবাদিকরা প্রশ্ন করে। সিন্ডিকেট কি ভালো? যে বা যারাই করুক সিন্ডিকেট তাদের সূত্র খুঁজতে হবে। সরকার এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কাজ করছে। শেখ হাসিনা ৩ ঘণ্টা ঘুমান। বাকি সময় দ্রব্যমূল্য নিয়ে ভাবেন, দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে, তা নিয়ে ভাবেন।’