আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে গত তিন সপ্তাহে এক হাজারেরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়া। এক মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা।
এদিন ইউক্রেনে খারকিভের কাছে একটি স্কুল এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আছড়ে পড়ে রুশ বোমা। এতে ২১ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৫ জন। আহতদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি বলেছেন, শান্তি চান না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার পক্ষ থেকে শান্তির কোনো ইচ্ছা নেই। তার যুদ্ধের ইচ্ছা আছে। তাই আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিত মস্কোর ওপর।
স্থল, সাগর ও আকাশপথে গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালায় রাশিয়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের কোনো দেশে এমন বড় হামলার ঘটনা আগে ঘটেনি। প্রাথমিক যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো বলছিল, কিয়েভে ইউক্রেন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতেই এই অভিযান।
তিন সপ্তাহের বেশি সময়ের যুদ্ধে রুশ বাহিনী এ পর্যন্ত ইউক্রেনের কেবল একটি শহরই তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় নিপার নদীবন্দর খেরসন এখন রাশিয়ার দখলে। রয়টার্সের খবর বলছে, রুশ হামলায় ভলনোভাখা শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
কয়েক দফা বৈঠকের পরও মিলছে না সমাধান। থামছে না রাশিয়া ও ইউক্রেনের লড়াই। সেনাবাহিনীর মৃত্যু তো হয়েছেই, তার সঙ্গেই মৃ্ত্যু হয়েছে একাধিক সাধারণ নাগরিকেরও। যদিও শুরু থেকেই রাশিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রাশিয়ার দাবি, যুদ্ধে কোনো সাধারণ নাগরিককে লক্ষ্য করে হামলা করা হচ্ছে না।
ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব বেশি বাড়াবাড়ি করলে পরমাণু যুদ্ধ কিংবা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি দিয়ে রেখেছে মস্কো। এ অবস্থায় নতুন কৌশল নিয়ে আর্থিকভাবে পুতিনকে কাবু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। দেশে দেশে জব্দ করা হচ্ছে রাশিয়ার সম্পদ। বিশ্ববাজারে রাশিয়ার তেল বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এরপরও পুতিনকে থামাতে পারছে না পশ্চিমা বিশ্ব।
এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির আহ্বানে সাড়া দিয়ে রুশ হামলা প্রতিরোধে কিয়েভকে একশো কোটি মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সামরিক সহায়তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে। সামরিক সহায়তার মধ্যে রয়েছে, ভূমি থেকে আকাশে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র জ্যাভলিন দুই হাজার। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্টিংগার ৮০০টি। দুই কোটি রাউন্ড গোলাবারুদ। সাঁজোয়া যান বিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবস্থা ৯ হাজার। এ ছাড়া ড্রোন, রাইফেল, পিস্তল, মেশিনগান, শটগান, রকেট ও গ্রেনেড লাঞ্চারও রয়েছে।