হোম রাজনীতি আরও কঠোর কর্মসূচির কথা ভাবছে বিএনপি!

রাজনীীত ডেস্ক:
হরতাল-অবরোধের পর আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়ার কথা ভাবছে বিএনপি। এমন ইঙ্গিত দিয়ে দলটির নেতারা বলছেন, নির্বাচন ঠেকাতে সুবিধামতো সময়ের অপেক্ষায় আছেন তারা। এরই মধ্যে দলের যেসব নেতা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে যেমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সামনে কেউ নির্বাচনে গেলে, একই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়েছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগসহ বেশিরভাগ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলেই এখন উৎসবের আমেজ। এমনকি এ আয়োজনে শামিল হয়েছেন বিএনপির মিত্রদের কেউ কেউ। শুধু নেতাকর্মীশূন্য বিএনপি কার্যালয়ে ঝুলছে তালা। অনলাইন ব্রিফিংয়ে সরব দলের নেতারা। দুয়েকজন অংশ নিচ্ছেন সভা-সেমিনারে।

এ প্রেক্ষাপটে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের ১৪ নেতার আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলে যোগ দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া।

বিষয়টিকে খুব বড় করে ভাবতে নারাজ দলটির শীর্ষ নেতারা। তারা বলছেন, দলছুট নেতাদের কারণে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না আন্দোলনে। তাবে এ বিষয়ে হাইকমান্ডের মনোভাব বেশ কঠোর।

নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দেয়া বিএনপি এবার আর একতরফা নির্বাচন হতে দিতে চায় না – এমন দৃঢ় মনোভাবের কথা জানিয়ে সিনিয়র নেতারা বলছেন, হরতাল-অবরোধের পর আরও কঠোর কর্মসূচি আসবে সামনে।

বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সাংবাদিকদেরকে বলেন, বিএনপি ছেড়ে যে ২/৪ জন চলে গেছেন, তারা আসলে পেশাগতভাবে দল পরিবর্তনকারী। তারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আগাগোড়া সম্পৃক্ত ছিলেন না। যারা চলে গেছেন, তারা ক্ষমতার কিছু উচ্ছিষ্ট ভোগ করতে চান। আর তাদের অনেককে দল থেকে আগেই বহিষ্কার করা হয়েছিল। আমাদের গঠনতন্ত্র মোতাবেক দলের শৃঙ্খলাবিরোধী যে ব্যবস্থা আছে, সেটা সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অভিযুক্তকে শোকজ করা হবে; পরে বহিষ্কার করা হবে। সে সবই করা হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আরও বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ বিএনপিকে নিয়ে অনেকেই ভাঙনের খেলা খেলেছেন। কিন্তু তারা বার বার ব্যর্থ হয়েছেন। ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হবেন বলে বিশ্বাস করি।’

তিনি বলেন, দেশের মানুষের ক্ষতি হবে – এমন কোনো কর্মসূচি বিএনপি দেবে না। যদিও হরতাল বা অবরোধের মতো কিছু কিছু কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু সেখানে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রের মাধ্যমে অন্তর্ঘাত করছে। এখানে মানুষ তো বোকা না। তারা সবই বুঝে। একতরফা নির্বাচন করতে সরকার কতটুকু এগুতে পারে, সেটা আল্লাহ জানেন। কিন্তু পুরো ব্যাপারটা দেশের জন্য মঙ্গল হচ্ছে না। এ অবস্থাটা অব্যাহত থাকলে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশ আরও ক্রান্তিকালের দিকে ধাবিত হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিনা রহমান বলেন, ‘এগুলো আন্দোলনে কোনো প্রভাব পড়বে না। ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর একজন বীর উত্তম, মুক্তিযোদ্ধা – এটাই ছিল তার গর্ব, তার অহংকার। সেটাকে (সম্মান) তিনি রাখতে পারলেন না। তিনি এখন নিজের পায়ে মাড়িয়ে চলে গেলেন (বিএনপি ছেড়ে)। শুধু ক্ষমতায় আসার জন্য কিংবা কিছু লোভে। এখন কেউ গেলে (দল ছাড়লে) সে যে আস্তাকুঁড়ে পড়ে যাবে, তা সবাই উপলব্ধি করছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে সেলিনা রহমান বলেন, আমরা তো কঠোর আন্দোলনই করছি। তবে হ্যাঁ, নানা রকম চাপে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। আন্দোলন আরও কঠোর হলেও হতে পারে। সবকিছুরই সময় গড়িয়ে গেলে একটা গতি হয়। তো সেভাবেই আমরা কী করবো, না করবো – তা সময়ই বলে দেবে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবার নিবন্ধিত ২৯টি দল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যদিও এর বিপরীতে নিবন্ধিত বাকি ১৫টিসহ দল বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্তে এখনও অনড়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন