হোম এক্সক্লুসিভ আম্পানের কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম এর সুগার ফল্ড! ভ্রাম্যমান জেনারেটরে মোবাইল চার্জ ৩০ টাকা

আম্পানের কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম এর সুগার ফল্ড! ভ্রাম্যমান জেনারেটরে মোবাইল চার্জ ৩০ টাকা

কর্তৃক
০ মন্তব্য 124 ভিউজ

ফেরদৌস আহমেদ :

সুপার সাইক্লোন আম্পান তান্ডবের ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও সাতক্ষীরার ৭০ শতাংশ জনপদ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে । গ্রামীণ জনপদে ব্যহত হচ্ছে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিসেবা । সাতক্ষীরা সদর,তালা ও কলারোয়া উপজেলাসহ বিধ্বস্ত উপকূলীয় অঞ্চলের রাস্তার দু ধারে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার ছিঁড়ে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে । সাতক্ষীরা পল্লী-বিদ্যুৎ সমিতির জি এমকে ১০ দিনের বাধ্যতা মূলক ছুটিতে পাঠানোর খবর পাওয়া গেছে । দায়িত্ব প্রাপ্ত এজিএমকে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন না ।

আম্পানের ঘূর্ণিঝড়ে সাতক্ষীরা জেলায় বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় । গাছ গাছালি পড়ে বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে পড়ে । অসংখ্য বৈদ্যুতিক খুঁটি রাস্তার ধারে ভেঙ্গে পড়ে থাকতে দেখা যায় । প্রায় সাড়ে ৪ লাখ গ্রাহক রয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির । বিদ্যুতহীন গ্রাম অঞ্চলে ও হাটবাজারে আলোর এক মাত্র ভরসা মোমবাতি ও ল্যাম্প । ভ্রাম্যমান জেনারেটরে টাকা দিয়ে মোবাইলে চার্জ দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে । সাতক্ষীরা শহর ও কলারোয়া পৌরসভায় ইস্টওয়েস্ট পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন জোন এক দিন পর বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারলেও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সেই সক্ষমতা দেখাতে পারেনি ।

ফলে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে গত ২০ মে থেকে বিভিন্ন গ্রাম বিদ্যুৎ বিছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। আম্পানের পর সরকারি দফতরগুলোতে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও বাড়িঘর ও বেসরকারি প্রায় সব প্রতিষ্ঠান এখনও বিদ্যুৎ-বিহীন অবস্থায় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডিজেল-চালিত জেনারেটর দিয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রিক যন্ত্রের ব্যাটারি চার্জ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

উপজেলার কাকডাঙ্গা বাজারের মকলেছুর রহমান বলেন, প্রতিটি ফোন চার্জ দিতে নিচ্ছে ৩০ টাকা। এছাড়াও টর্চলাইট চার্জ দিতেও নিচ্ছে ৩০ টাকা।

তিনি আরো বলেন, এই দুর্যোগের সময় ৩০ টাকা অনেক। যদি ১০ টাকা করে চার্জ দিতে নিতো তাহলে সবার সুবিধা হতো।

বাগাডাঙ্গা গ্রামের শামিম আহমেদ বলেন, দোকানে যারা মোবাইল ফোন বা টর্চলাইট চার্জ করতে দিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতিটা ফোন ও লাইটে নাম ও নম্বর লিখে রেখে দেওয়া হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন থাকায় ৩০ টাকা দিয়েই মোবাইল চার্জ করে নিচ্ছেন অনেকে। টাকা একটু কম নিলে সকলের সুবিধা হতো।

স্থানীয়রা জানান, বর্তমান অবস্থায় কলারোয়ার বিভিন্ন বাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অনেকেই এখন ফোনের ব্যাটারি চার্জ দেয়ার সাময়িক ব্যবসায় নেমেছেন। কলারোয়া উপজেলার কাকডাঙ্গা মোড়, বোয়ালিয়া, ফকিরপাড়ার মোড়, শাকদাহ, যুগিখালী, বুইতা, মাদরা, গয়ড়া, বুঝতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে লম্বা লাইন ধরেছে মানুষ। অন্যান্য উপজেলার হাট বাজারের চিত্র প্রায় একই রকম ।

সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম (কারিগরী) প্রকৌশলী মাসুম আহম্মেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সাতক্ষীরা জেলায় ১ হাজার ৭৮২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। তার ছিঁড়েছে বহু স্থানে। এই পরিস্থিতিতে সাতক্ষীরার প্রতিটি উপজেলায় লাইন সংস্কারের কাজ চলছে। তবে কলারোয়া উপজেলায় সব থেকে বেশি বিদ্যুৎ লাইনে ক্ষতি হয়েছে। তারপরও আমাদের কর্মীরা রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন। সব ঠিক থাকলে দুই এক দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।

বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে জানার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম সন্তোষ কুমার শাহার ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন দিলে তার স্ত্রী রিসিভ করেন । তিনি জানালেন,তার স্বামী অসুস্থ ঘুমচ্ছেন । অসুস্থতার খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টা করলে জিএম এর মিসেস জানালেন,আম্পানের কারণে টেনশনে সুগার ফল্ড করছে । বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে ও খুঁটি ভেঙ্গে বাজে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে । বিদ্যুৎ লাইন চালু করবে কিভাবে ?

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন