জাতীয় ডেস্ক:
নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির পূর্বঘোষিত ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের আগের রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড়ে বাসে আগুন দিয়েছে অবরোধের সমর্থকরা। এতে একজন দগ্ধ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে যাত্রাবাড়ী মোড়ে বাসটিতে আগুন দেয়ার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ করছে।
পুলিশের ধারণা, অবরোধকারীরা নাশকতা ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই এই আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আজ রাত ৮টা ৪০ মিনিটে যাত্রাবাড়ীতে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়ার সংবাদ আসে। খবর পাওয়ার পর আমাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে বাসের নাম জানা যায়নি।
নির্বাচন ঠেকাতে গত ২৮ অক্টোবর থেকে রাজপথে আগুন-সন্ত্রাস ও নাশকতা চালিয়ে আসছে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা। ২৯ অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী পাঁচ ধাপে ১১ দিন অবরোধ এবং তিনদিন হরতাল পালন করেছে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা।
একদিন বিরতি দিয়ে আগামীকাল বুধবার (২২ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত ৬ষ্ঠ ধাপে আবারও অবরোধ পালনের কর্মসূচি পালন করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো।
এদিকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ২৪ দিনে দেশের ১৯৭টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনা পুড়িয়ে দিয়েছে তারা। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে আগুন দেয়ার এই তথ্য জানানো হয়।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, ২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ১৯৭টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনা পোড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে মোট বাস ১১৮টি, ট্রাক ২৬টি, কাভার্ডভ্যান ১৩টি, মোটরসাইকেল ৮টি, প্রাইভেটকার ২টি, মাইক্রোবাস ৩টি, পিকআপ ৩টি, সিএনজি ৩টি, ট্রেন ২টি, নছিমন ১টি, লেগুনা ৩টি।
এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি, পুলিশের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ১টি করে পোড়ানো হয়ছে। পাশাপাশি বিএনপির ৫টি অফিস, আওয়ামী লীগের ১টি, পুলিশ বক্স ১টি, কাউন্সিলর অফিস ১টি, বিদ্যুৎ অফিস ২টি, বাস কাউন্টার ১টি, শোরুম ২টি এবং অন্য ২টি স্থাপনা পোড়ানো হয়।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত দিনে গড়ে ৭টি করে যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে। আর এ সময়ে দিনে গড়ে ৫টি করে বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে রাজধানীর মধ্যে মিরপুরে সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। আর জেলা হিসেবে গাজীপুরে, উপজেলা হিসেবে বগুড়া সদরে আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া ৩৪ জেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, ৩০টিতে কোনো আগুনের ঘটনা ঘটেনি।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৪১টি ইউনিট ও ১ হাজার ৮৮৮ জন কর্মী কাজ করেছেন।