আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ফের আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। তাদের দাবি, এটি একটি সলিড ফুয়েল ক্ষেপণাস্ত্র। সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্রটি তাদের ছোড়া সবগুলো ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক এবং সময় উপযোগী। পিয়ংইয়ংয়ের এ পরীক্ষার নিন্দা জানিয়েছে ওয়াশিংটন, সিউল ও টোকিও।
গতকাল বৃহস্পতিবার ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোঁড়া হয় বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যম কেসিএন। খবর বিবিসির।
আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষায় অবিশ্বাস্য সফলতা পাওয়া গেছে বলে দাবি পিয়ংইয়ংয়ের। আর ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত হওয়ার পর জাপানে বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়তে বলা হয়।
বিবিসি বলছে, লিকুইড ফুয়েলের থেকে দ্রুত যায় সলিড ফুয়েল ক্ষেপণাস্ত্র। এসব ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিরোধ করা কঠিন। তবে, বিশ্লেষকরা বলছে, এরকম ক্ষেপণাস্ত্রকেও প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এদিকে, উত্তর কোরিয়ার দাবি মানতে নারাজ দক্ষিণ কোরিয়া। তাদের মতে, পিয়ংইয়ংয়ের সলিড ফুয়েল ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে আরও সময় লাগবে।
প্রতিবেদনে বিবিসি বলছে, এতদিন ধরে সলিড ফুয়েলের স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে পিয়ংইয়ং। তবে, এবার সলিড ফুয়েলের আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তারা। এমনকি, এর আগে তারা যতগুলো আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল সেগুলো ছিল লিকুয়ড ফুয়েলের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্র পোগ্রোমের সর্বশেষ অগ্রগতি। এটি যুগান্তকারী। কোনো বাধা ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম এই আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র।
বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলে, এই প্রযুক্তি খুব একটা নতুন নয়। সলিড ফুয়েলে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে মধ্যম পর্যায়ের সফলতা পিয়ংইয়ং পেয়েছে বলে স্বীকার করেছে তারা।
বৃহস্পতিবারের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেছেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বোন কিম ইয়ো জং, স্ত্রী রি সল জু এবং মেয়ে কিম জু আয়ে।
কিম জং উন বলেছেন, ‘যে আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছে সেটির নাম হওয়াসং-১৮। এর সফল পরীক্ষা প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর ভয় ও উদ্বেগ বাড়াবে। এটি আমাদের আগ্রাসী সামরিক কৌশলের বড় সমর্থন দেবে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল শুক্রবার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ছোড়া আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি মূলত সলিড ফুয়েল ও এর মোটর এবং ঠিকমতো কাজ করছে কি না তা দেখার জন্য। এই পরীক্ষার ফলে দ্বন্দ্বে পড়ে যায় জাপান। ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া হক্কিয়াদো দ্বীপের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হতে বিলম্বিত হয়। এমনকি, অনেক স্থানে রেলসেবা ব্যাহত হয়েছে।