বাণিজ্য ডেস্ক :
পানি নিষ্কাশনের ফলে মনুনদী প্রকল্পভুক্ত মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর এ দুটি উপজেলার কৃষকরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে আমন চাষাবাদ শুরু করেছেন। বিলম্বে চাষাবাদ শুরু হলেও এরইমধ্যে প্রায় সত্তর শতাংশ জমিতে আমন চাষাবাদ সম্পন্ন হয়েছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের শঙ্কিত না হয়ে বিআর-২২ ও ২৩ জাত আমন চাষাবাদের পরামর্শ দিয়েছেন।
সম্প্রতি অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল মৌলভীবাজারের মনুনদী প্রকল্পভুক্ত হাওড় কাউয়াদিঘিতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পায়। এতে মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর এ দুটি উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় ১৫০০ হেক্টর আমন ফসলের জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
হাওড় পাড়ের কৃষকরা ধারনা করছিলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু দিনের মধ্যেই পাম্প চালিয়ে পানি নিষ্কাশন করে দিলেই তারা চাষাবাদ শুরু করবেন। তবে বিদ্যুৎ সংকটে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাম্প চালাতে পাড়েনি। এতে এ দুটি উপজেলার কৃষক সঠিক সময়ে আমন চাষাবাদ করতে না পারায় বীজতলাতে তাদের আমনের চারা বিনষ্ট হয়।
এক রকম অনিশ্চিত হয়ে পড়ে মনুনদী প্রকল্পভুক্ত এলাকাতে আমন চাষাবাদ। এতে কৃষকেরা এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগী ভূমিকা নিতে জেলা প্রশাসন বরাবরে আবেদন জানান।
জেলা প্রশাসনের প্রচেষ্টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড দুই মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুৎ পেয়ে জলাবদ্ধতার পানি নিষ্কাশন করতে সক্ষম হয়। এতে কৃষকরা এখন ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে আমন চাষাবাদ শুরু করেছেন।
কৃষকরা জানান- আরও আগে পানি নিষ্কাশন হলে তারা বেশি পরিমাণ আমন রোপণ করতে পারতেন। তবে বিলম্বে চাষাবাদ করায় তাদের মধ্যে আমন উৎপাদন নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।
হাওড় রক্ষা সংগ্রাম কমিটি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক রাজন আহমদ বলেন, জলাবদ্ধতায় আমনের হালি চারা পুরোটাই বিনষ্ট হওয়াতে বাইরে থেকে বেশি দামে চারা কিনে চাষাবাদ হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এর সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বললেন- বিদ্যুৎ পাওয়া মাত্রই পাম্প চালু রেখে হাওড়ের পানি নিষ্কাশন করা হয়।
আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ কৃষকদের বিলম্বে ধান রোপণে শঙ্কিত না হয়ে বিআর- ২২ ও ২৩ জাত আমন চাষাবাদের পরামর্শ দিয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্যমতে, এ বছর মৌলভীবাজার জেলায় এক লাখ এক হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ ধরা হলেও- উৎপাদন ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯৭ হাজার ৪৬৩ মেট্রিক টন।