অনলাইন ডেস্ক :
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে উদ্ভূত সংকট মোকাবিলায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত তিন মাসে এজন্য দেশের সবমহলের মানুষের জন্য গ্রহণ করেছেন প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ। সারাদেশে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ঐকান্তিক চেষ্টার পাশাপাশি দিনমজুর ও গরিব শ্রেণির মানুষের খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে ঘোষণা করেছেন এক লাখ তিন হাজার ১১৭ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ। সরকার ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি তার দল আওয়ামী লীগকেও জনগণের দোরগোড়ায় নামিয়েছেন তিনি। সরকার ও দলের সমন্বয়ে মানুষকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টিও তিনি সরাসরি মনিটরিং করছেন। এভাবে দরকারি সব উদ্যোগ নিয়ে করোনা সংকট মোকাবিলায় দেশবাসীর পাশে থেকে সাহস ও উৎসাহ জুগিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
গত মার্চের শুরুতেই বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এ ভাইরাস থেকে দেশবাসীকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া শুরু করেন সরকার প্রধান। এজন্য দেশের বিমানবন্দর ও সীমান্তগুলোতে নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তবে তারপরও বিদেশ ফেরতদের অসচেতনতার কারণে দেশে এ ভাইরাস দেখা দিলে সময়োপযোগী নানা পদক্ষেপ ঘোষণা করেন তিনি। করোনাভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্থগিত করা হয় ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহণে মুজিব শতবর্ষের উন্মুক্ত অনুষ্ঠান, বাতিল করা হয় ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচি। এরপর লকডাউন শুরু হলে সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সরকারি কাজের পাশাপাশি করোনা মোকাবিলার কাজও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গণভবনে থেকেই শেখ হাসিনা সামলাচ্ছেন দাফতরিক কাজ, সভা করছেন, ভিডিও কনফারেন্সে নিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের খোঁজ, দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। প্রয়োজনীয় ফাইল দেখছেন, স্বাক্ষর করছেন। ফোনে যোগাযোগ করছেন দলের নেতাদের সঙ্গে, এসএমএসে কেউ সহযোগিতা চাইলে তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এসব পদক্ষেপের কারণে দেশ করোনা সংকট কাটিয়ে আবারও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদী তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগেই অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে ফেরতদের কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনা ঠেকানো যায়নি। করোনার সংক্রমণ এদেশে ধরা পড়ার পর পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় আমাদের সীমিত সামর্থ্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নত দেশগুলোর মতো শক্তিশালী না হলেও মৃত্যুহার অনেক কম। অনেক উন্নত দেশ যেখানে ১২ বা ১৪ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যুহার দেখেছে সেখানে এদেশে এখনও সে হার এক দশমিক তিন শতাংশ।
গত ২ জুন অনলাইনে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় গণভবন থেকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এ দেশে সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন মানুষ জীবিকার সংকটে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব তত্ত্বাবধানে সরকারের পাশাপাশি দল থেকেও ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালানো হয়। খেটে খাওয়া মানুষের এ দেশে একজনও না খেয়ে মরেনি। পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্থবিরতা মোকাবিলায় নেওয়া হয় এক ডজনের বেশি প্রণোদনা প্যাকেজ। এভাবে প্রধানমন্ত্রী জীবন ও জীবিকা দুটোই রক্ষা করেছেন। তার এই সুদক্ষ নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, ফোর্বস ম্যাগাজিনসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী ও যথাযথ পদক্ষেপই আমাদের এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথে। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এ প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে বলে তথ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
লকডাউনে প্রধানমন্ত্রী তার ত্রাণ তহবিলে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহায়তা দিতে এলে তাদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে না পারলেও ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন। সেদিন তিনি নিজেই কিভাবে হাঁচি-কাশির দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে তা ভিডিও কনফারেন্সে সবাইকে দেখিয়ে দেন। নিজে যেমন মাস্ক ও গ্লাভস পরে কাজ করছেন সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে কাজ করার অনুরোধ জানান।