বাণিজ্য ডেস্ক :
রোজার আগেই বেগুনের সেঞ্চুরি আর রোজার প্রথমার্ধে লেবুর ডাবল সেঞ্চুরিতে সবজি বাজার চলে গেছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। এবার একই তালিকায় নাম লিখিয়েছে শিম।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। অন্যদিকে আগের দামেই বেগুন প্রতিকেজি এখনো ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচোছ। বাজারে ৪০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি।
রোজার আগে বেগুনের কেজি ছিল ২০-৪০ টাকা। একইভাবে শিমের কেজি ছিল ৫০-৬০ টাকা। কিন্তু রোজা শুরু হতে না হতেই লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকে সবজির দাম।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা যুক্তি দেখাচ্ছেন, রোজায় মানুষ ইফতারিতে বেগুনি পছন্দ করে। এতে করে বেড়ে যায় বেগুনের চাহিদা। ফলে বাড়ে দাম।
এদিকে শিমের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিমের মৌসুম শেষ। বাজারে যেসব শিম আসছে সেগুলো বিশেষ পদ্ধতিতে চাষ করা। পরিমাণে কম হওয়াই শিমের দাম বাড়তি।
রামপুরার বৌবাজারের সবজি বিক্রেতা তরিকুল আলম জানান, বাজারে শিম আসছে কম। কিন্তু ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শিমের চাহিদা থাকায় বেড়ে গেছে এ সবজিটির দাম।
অন্যদিকে উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা হরিপদ সাহা বলেন, রোজার মৌসুমে সবসময়ই দাম বাড়তির দিকে থাকে। মৌসুম শেষ হলে দাম আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
একই বাজারে কথা হয় ক্রেতা আলমগীরের সঙ্গে। সবজির দাম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আক্ষেপের সঙ্গে তিনি বলেন, বাজারে ৪০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি ১০ টাকার শাকও বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। বাজারে সবকিছুর দাম এত বেশি যে আমাদের মতো ছাপোষা মানুষদের টিকে থাকতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আরেকজন ক্রেতা আসমা বেগম বলেন, কদিন আগেও শিমের দাম দেখে গেলাম ৬০ টাকা কেজি। আজকে বাজারে এসে শুনি সেই দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ টাকায়। সবজির দাম নিয়ে বিক্রেতারা যাচ্ছেতাই করছে। দেখারও কেউ নেই। নেই কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা।
যদিও রোজার প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পরপরই কমেছে শসার দাম। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসা এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
শসার দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে অন্যান্য সবজির দাম। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
সাজনার ডাটা গত সপ্তাহের মতো ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। তেলাপিয়া, পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। চাষ করা শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। শৈল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা।
মাছের মতো দাম অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগি ও গরুর মাংসের। ব্যবসায়ীরা আগের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা। আর গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতো ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।