হোম জাতীয় মিকসের অবস্থান ইতিবাচকভাবেই দেখছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা

জাতীয় ডেস্ক :

বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেওয়া প্রভাবশালী মার্কিন কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিকসের অবস্থানকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তাদের মতে, পুরো বিষয়টি দেখতে হবে বস্তুনিষ্ঠতার চোখে। যে কারণে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সেই কর্মপন্থায় পরিবর্তন এনে তা অবগত করতে হবে আমেরিকাকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্রেগরি মিকসের মতো বন্ধুদের সহায়তা কাজে লাগাতে বাংলাদেশকে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করতে হবে। তাদের কারও কারও সমর্থনকে কাজে লাগাতে, দীর্ঘ মেয়াদে দেশকে বস্তুনিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিয়ে তা উপস্থাপন করতে হবে। কংগ্রেসের শুনানিতে ইতিবাচক ফল পেতে কার্যকর নীতিগত তথ্য উপস্থাপনের তাগিদ তাদের।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পররাষ্ট্র বিশ্লেষক হুমায়ুন কবির বলেন, তারা যে বক্তব্য দিচ্ছেন তার সমর্থনে দেশের অভ্যন্তরে ইতিবাচক কাজ করতে হবে। তা না হলে আমাদের যে বন্ধুরা মার্কিন কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিকসকে অনুষ্ঠানে নিয়ে এসেছেন তাদের বিশ্বাসযোগ্যতাও কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

যেসব অভিযোগের ভিত্তিতে মার্কিনিদের চোখে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হয়েছে র‌্যাবকে, সেই পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে না পারলে গ্রেগরির মতো সহায়তাও কাজে আসবে না বলে মত দেন তিনি।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি হয়তো ব্যাখ্যা দিতে চেষ্টা করেছেন যে, এটাকে নিয়ে আরও বড় কিছু হচ্ছে সামনে, এ ধরনের কেউ চিন্তাভাবনা না করে।’

দীর্ঘ মেয়াদে এমন পরিস্থিতি এড়াতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপরও নজর দিতে বলছেন পররাষ্ট্র বিশ্লেষক সংশ্লিষ্টরা।

ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমেরিকা বলছে বলে আমি করব, সেটা যেমন ঠিক নয়, আবার আমেরিকা এটাকে নিয়ে সাংঘাতিকভাবে বাংলাদেশের পেছনে লেগেছে মানে এটা তো অস্বাভাবিক ব্যাপার হবে।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায় না বলে জানিয়েছেন প্রভাবশালী মার্কিন কংগ্রেসম্যান এবং হাউস কমিটি অন ফরেন অ্যাফেয়ার্সের চেয়ারম্যান গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস।

মিকস বলেছেন, `আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি না এবং আমরা এখনো বাংলাদেশ ও দেশটির জনগণের সঙ্গে কাজ করছি।’

এ সময় ওয়াশিংটন ও ঢাকার মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সোমবার নিউইয়র্কের কুইন্সের একটি রেস্তোরাঁয় তহবিল সংগ্রহের মধ্যাহ্নভোজ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মিকস।

মিকস একজন প্রখ্যাত আইনজীবী, যিনি ১৯৯৮ সাল থেকে ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন প্রতিনিধি ছিলেন।

২০২১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিষয়ক হাউসের চেয়ার হিসেবে কাজ করছেন মিকস। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি না। নিষেধাজ্ঞাগুলো ছিল একটি সংস্থার কিছু ব্যক্তির ওপর। পুরো সংস্থার ওপর নয়। আমরা সেখানে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে মিকস বলেন, ‘আরও কিছু কর্মকর্তা এবং রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জোরালোভাবে লবিং করছে বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে। তবে আমরা তাদের কথামতো তা করব না। এটা সম্ভব নয়।’

মিকস মানবাধিকার পরিস্থিতি দেখতে এ বছর বাংলাদেশ সফর করবেন বলেও জানান। ‘তার আগে, আমি স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং কংগ্রেস সাবকমিটি অন এশিয়া প্যাসিফিকের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে বাংলাদেশ ইস্যুতে কংগ্রেসে শুনানির ব্যবস্থা করব,’ বলেন মিকস।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন