হোম অন্যান্যসারাদেশ লিচুর ফলন ভালো হলেও বিক্রি নিয়ে শঙ্কা

লিচুর ফলন ভালো হলেও বিক্রি নিয়ে শঙ্কা

কর্তৃক
০ মন্তব্য 112 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক :

গাজীপুরের শ্রীপুরে এ বছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। তবে বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আছেন বাগান মালিকরা। প্রতি বছর লিচু ফুল ফোটার পর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেপারিরা এসে লিচু বাগান কিনতেন। তারাই বাগান পরিচর্যা করতেন এবং ফল পাকলে বিক্রি করতেন। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে বেপারি না আসায় বাগান মালিকরাই লিচু ঢাকার বিভিন্ন আড়তে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। তাই এ নিয়ে আর্থিক ও শ্রমিক সংকটে আছেন তারা।

শুক্রবার (৮ মে) শ্রীপুরের বিভিন্ন বাগানে সরেজমিনে দেখে এই তথ্য জানা গেছে। বাগান মালিক আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছোট আকারের ৪৮টি লিচু গাছ রয়েছে। ফুল ফোটার পরই নারায়ণগঞ্জের বেপারিদের কাছে লিচু বাগান বিক্রি করে দিয়েছি। তবে বিক্রির সময় দেশে করোনা ছিল না। কিন্তু এখন লকডাউনের ফলে বাইরের বেপারিরা এলাকায় আসছেন না। অনেক বাগান মালিক নিজেরাই কীটনাশক প্রয়োগ ও পাহাড়ার ব্যবস্থা করছেন। এতে বাগান মালিকদের ভোগান্তি ও উৎপাদন খরচ বেড়েছে।’

তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামের আরেক বাগান মালিক কায়সার মৃধা খোকন বলেন, ‘আমার তিনটি বাগানে ২০০টি লিচু গাছ রয়েছে। প্রতি বছর লিচুর মৌসুমে শুরু থেকে নারায়ণগঞ্জ থেকে পাইকার আসতে শুরু করে। পছন্দমতো দাম পেলেই বাগান বিক্রি করে দিতাম। লিচু লাল হওয়া পর্যন্ত তাদের নিজ উদ্যোগে বাগান পরিচর্যা করতো। এ বছর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও লকডাউনের কারণে তারা আসছে না। নিজেরাই বাগান পরিচর্যা করছি। শেষ পর্যন্ত খরচ তুলতে পারবো কিনা শঙ্কায় আছি।’

বাগান মালিক নূরুল আলম বিএসসি বলেন, ‘লিচুর ফুল ফোটার শুরুতে এলাকায় মধুর বক্স নিয়ে মৌচাষিরা আসতেন। তারা ফুল থাকাকালীন প্রায় ১৫ দিনের মতো মধু সংগ্রহ করতেন। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে লিচুর মধু সংগ্রহের প্রক্রিয়াটিও বাদ পড়েছে।’

আরেক বাগান মালিক এনামুল হক আকন্দ বলেন, ‘বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এলাকায় বেপারি না আসলে নিজ উদ্যোগে বাগান মালিকদের ঢাকায় নিয়ে লিচু বিক্রি করতে হবে। এতে উৎপাদন খরচ বা সঠিক মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

কেওয়া পশ্চিম পাড়ার আলমাছ উদ্দিন বলেন, তার বাগানে ১৫০টি লিচু গাছ রয়েছে। সাড়ে সাত লাখ টাকায় বাগান বিক্রি করেছেন। তবে এবার জেলার বাইরের বেপারি আসেনি। এলাকার বেপারিদের কাছে বিক্রি করেছেন। দুই মাস আগে বিক্রির বায়না পেয়েছেন মাত্র ৬০ হাজার টাকা। করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর বেপারিরা সময় মতো টাকা দিতে পারেনি। অন্যান্য বছর জেলার বাইরে থেকে বেপারি আসতেন। লিচুর দামও ভালো পাওয়া যেত। কোনও কোনও বাগান মালিক এবার শ্রমিকের অভাবে সঠিকভাবে ও সময়মতো ওষুধ স্প্রে এবং প্রয়োজনীয় পরিচর্যাও করতে পারেনি। তারপরও ফলন ভালো হয়েছে।

লিচু শ্রমিক ফারুক হোসেন বলেন, ‘লিচু ফলনের চার মাস একটি গ্রামের বাগানগুলোতে কমপক্ষে ৩০০-৫০০ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়। এবার করোনা পরিস্থিতি এ সম্ভাবনাকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। বাগান মালিকেরা লিচুর ন্যায্য দাম না পেলে শ্রমিকের মজুরি পরিশোধে হিমশিম খাবেন।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন