জাতীয় ডেস্ক :
নাটোরে অপহরণের মুক্তিপণ আদায় করতে প্লায়ার্স দিয়ে দোকান কর্মচারির নখ তুলে ফেলার অভিযোগ উঠেছে জেলা যুবলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ৮ জনকে অভিযুক্ত করে সদর থানায় মামলা হলে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নাটোর সদর থানার পরিদর্শ (তদন্ত) আবু সাদাদ জানান, নাটোর শহরের কানাইখালী এলাকার পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের সাথে ‘ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে একই এলাকার যুবলীগ নেতা একরাম হোসেন সুমনের দ্বন্দ্ব ছিল। এরই জের ধরে গত শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের স্টেশন বাজার এলাকায় দোকান থেকে আব্দুস সালাম ও তার দোকানের কর্মচারি ফয়সাল হোসেনকে তুলে নিয়ে যায় সুমনের বন্ধু যুবলীগ নেতা-কর্মীরা।
পরে যুবলীগ নেতা সুমন সালামের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। কিন্তু সালাম মুক্তিপণ দিতে অস্বীকার করায় পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রনি আহমেদ এবং তার ভাই যুবলীগ নেতা রবিউল আওয়াল বাপ্পির সহযোগিরা প্লায়ার্স দিয়ে দিয়ে ফয়সালের বাম হাতের তর্জনী আঙুলের নখ উপড়ে ফেলেন। এমন পরিস্থিতি দেখে ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম ভয়ে ২ লাখ টাকা দিতে রাজি হন।
পরে ব্যবসায়ী সালাম তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি যুবলীগ নেতাদের কাছে নিজের মুক্তিপণ হিসেবে সাময়িক বন্ধক রাখেন এবং টাকা সংগ্রহ করতে যাচ্ছেন এমন শর্তে অপহরণকারীদের নিকট থেকে ছাড়া পান। এ সময় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা সাদা স্ট্যাম্পে সাক্ষর নিয়ে আব্দুস সালামকে টাকা সংগ্রহের জন্য ছেড়ে দেয়।
এদিকে, ব্যবসায়ী সালাম ছাড়া পেয়েই থানায় যান এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একরাম হোসেন সুমনের বাড়ি থেকে আহত অবস্থায় ফয়সালকে উদ্ধার করে।
পুলিশ কর্মকর্তা আবু সাদাদ জানান, এই ঘটনায় রোববার সকালে ভুক্তভোগী আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওইদিন রাতেই অভিযুক্তদের মধ্যে একরাম হোসেন ওরফে সুমন (৩৫) ও মো. আবির (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ব্যাপারে নাটোর জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব জানান, এটি একটি নৃশংস ঘটনা। যারাই এর সঙ্গে জড়িত আছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘ঘটনার পরপরই পুলিশ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ভুক্তভোগী ও মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’