খুলনা অফিস :
খুলনায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে লাগামহীন দুর্নীতি,বেপরোয়া ঘুষ গ্রহন,নানা ধান্ধবাজির মাধ্যমে অর্থ আদায় এবং ঠিকাদারদের জিম্মী করে আর্থিক ফায়দা হাসিলের অভিযোগে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সর্বশ্রেনীর ঠিকাদাররা।এ অবস্থায় গত তিনদিন যাবৎ নির্বাহী প্রকৌশলী নাসিম রেজার অফিস ঘেরাও করার পাশাপাশি তার তাৎক্ষনিক অপসারন দাবী করে অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদাররা।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় নগরীর দৌলতপুরস্থ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের অফিসে গিয়ে দেখা যায় যে নির্বাহী প্রকৌশলী তার কর্মক্ষেত্রে আসেননি।গত রোববার সকাল ৭টার দিকে তিনি একবার অফিসে এসেছিলেন। ঠিকাদাররা জানান, ওইদিন দুপুরের আগে তাকে তার এক ঘনিষ্ট লোক দিয়ে কৌশলে ডেকে এনে তার দুর্নীতি অনিয়মের ব্যাপারে তার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছিল। মুলতঃ তিনি কখনো ঠিকমত অফিস করেন না। যেদিন তার ধান্ধা বা ঘুষ বানিজ্য থাকে সেদিনই তিনি অফিস করেন।
এদিকে ঠিকাদাররা গতকাল মঙ্গলবারের অবস্থান ধর্মঘটকালীন তাদের বক্তব্যে নির্বাহী প্রকৌশলী নাসিম রেজার বহুবিধ দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরেন।বক্তারা বলেন,“নির্বাহী প্রকৌশলী দির্ঘদিন যাবৎ অফিসের গুরুত্বপুর্ন কাজগুলি আউটসোর্সিং লোক দিয়ে পরিচালনা করাতে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।এরা তার পক্ষে ঠিকাদারদের কাছ থেকে উৎকোচ আদায়ে সব সময় মরিয়া হয়ে থাকে।উৎকোচ না দিলে চলমান ঠিকাদারী কাজের ফাইল থামিয়ে দেয়।এখানে তিন কোটি টাকার উর্ব্ধের কাজ ওটিএম (ওপেন টেন্ডার মেথড) পদ্ধতিতে হয়ে থাকে এবং তিন কোটির মধ্যের কাজ এলটিএম পদ্ধতিতে করার বিধান রয়েছে।
যাতে লটারীর মাধ্যমে ঠিকাদার নির্ধারিত হয়।এক্ষেত্রে তিন কোটি টাকার নিচের কাজ নির্বাহী প্রকৌশলী টাকার বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারদের পাইয়ে দেন।তিনি বিভিন্ন সময় তার ব্যাক্তিগত অপছন্দের ঠিকাদারদের কালো তালিকাভুক্ত করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে দেন।রফিক এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাহী প্রকৌশলী বেনামে ঠিকাদারী ব্যবসা করে কালো টাকার পাহাড় গড়ছেন।ঠিকাদারী কাজের কার্যাদেশ পেতে গেলে নির্বাহী প্রকৌশলীকে দুই পার্সেন্ট ঘুষ দিতে হয়।
আবার সম্পাদিত কাজের বিলের চেক পেতেও তাকে বিলের টাকার দুই পার্সেন্ট উৎকোচ হিসেবে দিতে হয়।তা না হলে দিনের পর দিন বিল আটকে থাকে,কার্যাদেশ আটকে থাকে”।এ অবস্থায় তারা অতি দ্রæত নির্বাহী প্রকৌশলীর অপসারনের পাশাপাশি তার ও তার পরিবারের সদস্যদের অর্থ সম্পদের হিসাব নিতে দুদকের তদন্ত দাবী করেন।একই সাথে অপসারন না হওয়া পর্যন্ত উন্নয়ন কাজে অংশগ্রহন করবে না বলে ঘোষনা দেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঠিকাদারদের অবস্থান ধর্মঘটকালীন সমাবেশে বক্তৃতা করেন ঠিকাদার নেতা ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী, রুবায়েত হোসেন বাবু,শেখ দাউদ হায়দার,শেখ আসলাম হোসেন,মোল্যা জাহাঙ্গীর কবির,বাচ্চু মোড়ল,মোঃ কালাম ফকির প্রমুখ।
এসব বিষয়ে জানতে নির্বাহী প্রকৌশলীর মোবাইল ফোনে গত তিনদিন যাবৎ সংবাদকর্মীরা ফোন দিলে প্রতিবারই তিনি সংযোগ কেটে দেন।
এব্যাপারে এ দফতরের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আ.ট.ম মারুফ আল ফারুকীর সাথে সেল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, তিনি বরিশালে আছেন। খুলনায় তার অতিরিক্ত দায়িত্ব।এ কারনে কিছুই জানেন না। তবে এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিবেন।
s