অনলাইন ডেস্ক :
‘ইসলামিক স্টেট’ গোষ্ঠিটির এক বিশাল অনলাইন লাইব্রেরির সন্ধান মিলেছে যেখানে তাদের চরমপন্থী মতাদর্শের বহু জিনিস রাখা আছে। ইনস্টিটিউট অব স্ট্রাটেজিক ডায়ালগ (আইএসডি) নামের একটি গবেষণা সংস্থার গবেষকরা এই ডিজিটাল লাইব্রেরির সন্ধান পেয়েছেন।
এই ডিজিটাল লাইব্রেরিতে আছে ৯০ হাজারের বেশি আইটেম। প্রতিমাসে প্রায় ১০,০০০ মানুষ এই ডিজিটাল লাইব্রেরির সাইটে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্টারনেটে যেন ক্রমাগত চরমপন্থী মতাদর্শের নানা বিষয় দেয়া যায়, এই লাইব্রেরি যেন সেই উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।
কিন্তু এই লাইব্রেরিটি বন্ধ করা যাচ্ছে না, কারণ এর তথ্য কোন একটি জায়গায় সংরক্ষিত নয়।
ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাস-বিরোধী কর্তৃপক্ষকে এই অনলাইন লাইব্রেরির ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে, কিন্তু তারপরও এটির কলেবর বেড়েই চলেছে।
দু’হাজার উনিশ সালের অক্টোবরে ইসলামিক স্টেটের গুরুত্বপূর্ণ নেতা আবু বকর আল-বাগদাদী নিহত হওয়ার পর প্রথম এই লাইব্রেরির খোঁজ পাওয়া যায়।
তখন ইসলামিক স্টেটের সমর্থনে অনেক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের নীচে এটির লিংক দেয়া থাকতো।
এর ভিত্তিতেই গবেষকরা এই লাইব্রেরির সন্ধান পান। সেখানে নয়টি বিভিন্ন ভাষায় অনেক দলিল এবং ভিডিও রাখা ছিল।
এর মধ্যে ছিল অনেক সন্ত্রাসবাদী হামলার বিস্তারিত তথ্য। যেমন, ২০১৭ সালের ২২শে মে ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় হামলা, ২০০৫ সালের ৭ই জুলাই লন্ডনে হামলা এবং ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে হামলার ঘটনা।
আইএসডির ডেপুটি ডিরেক্টর মোস্তাফা আইয়াদ, যিনি এই লাইব্রেরির সন্ধান পান, তিনি বলেন, “একটা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করার জন্য যেসব বিষয় জানা দরকার, তার সবই সেখানে আছে। কীভাবে একজন ভালো সন্ত্রাসবাদী হতে হবে, তা শেখানোর সব কিছুই সেখানে আছে।”
আইএসডি এই লাইব্রেরির নাম দেয় ‘ক্যালিফেট ক্যাশে’ বা খেলাফতের গুপ্ত ভান্ডার।
আইএসডির গবেষকরা কয়েকমাস ধরে এটির ওপর গবেষণা চালিয়েছেন। তারা বোঝার চেষ্টা করেছেন কিভাবে এটি তৈরি হয়েছে, কারা কীভাবে এটি চালায় এবং কারা এই সাইটে আসে।
এই লাইব্রেরির তথ্য একটি কম্পিউটার সার্ভারে রাখা হয়নি। সব তথ্য ছড়ানো আছে এক বিকেন্দ্রীকৃত ব্যবস্থায়।
যে কেউ অনলাইনে এগুলো শেয়ার করতে পারে বিভিন্ন জায়গায় রাখা সার্ভারের মাধ্যমে।
যার ফলে এই সাইটটি বন্ধ করা সহজ নয়।
পপ সঙ্গীত তারকা
ইসলামিক স্টেটের এসব বিষয় সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্ট পেজেও যুক্ত করা হয়। বট একাউন্টের (স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রাম) মাধ্যমে এগুলি ছড়িয়ে দেয়া হয়। তাদের আরেকটি কৌশল হচ্ছে সেলিব্রেটি এবং নামকরা অ্যাথলীটদের টুইটার একাউন্ট টার্গেট করা।
যেমন পপ তারকা জাস্টিন বিবারের এক ভক্তের একাউন্ট হাইজ্যাক করে ইসলামিক স্টেট। এরপর তারা এই একাউন্ট ব্যবহার করে তাদের লাইব্রেরির জিনিসপত্র প্রচার করে।
আরেক ঘটনায় ইসলামিক স্টেট এমন এক একাউন্ট তৈরি করে যেটি মনে হচ্ছে যেন ইংলিশ রাগবি দলের এক সমর্থকের একাউন্ট। এরপর তারা ইংলিশ রাগবি টিমের একাউন্টকে তাদের একাউন্টের ফলোয়ার বানাতে সক্ষম হয়।
তবে ইসলামিক স্টেটের লাইব্রেরির সব জিনিস যে সহিংসতায় ভরা তা নয়। সেখানে ইসলামিক স্টেটের দর্শন, ধর্মীয় নানা বই আছে। ইসলামিক স্টেট প্রতিষ্ঠিত হলে সেটি দেখতে কেমন হবে, তার প্রপাগান্ডামূলক অনেক বিষয়ও রাখা আছে।
গবেষকরা বলছেন, শামীমা বেগমের মতো যেসব মেয়ে পালিয়ে গিয়ে ইসলামিক স্টেটের জঙ্গীদের বধু হয়েছে. তারা হয়তো এসব দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছে।
তবে ইসলামিক স্টেটের এই ডিজিটাল লাইব্রেরিতে যারা আকৃষ্ট হয়েছে তাদের বেশিরভাগ আসলে ১৮-২৪ বছর বয়সী আরব পুরুষ। এই সাইটে বেশিরভাগ ট্রাফিক এসেছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে, বিশেষ করে ইউটিউব থেকে।
আইএসডি তাদের গবেষণায় দেখেছে, ইসলামিক স্টেটের এরকম গোপন তথ্যভান্ডার অভিনব কিছু নয়।
অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চরমপন্থী গোষ্ঠীরও একই ধরণের ছোট ছোট তথ্য ভান্ডার আছে। এরাও বিকেন্দ্রীকৃত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এর জন্যে।
গবেষকরা এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিসকে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন, লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃপক্ষকেও তারা বিষয়টি জানিয়েছেন।
নিউ ইয়র্কের কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোন মন্তব্য করেন নি।
তবে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং স্পেশালিস্ট অফিসাররা এখন ব্যাপারটি খতিয়ে দেখছেন।
তবে ইসলামিক স্টেটের এই ডিজিটাল লাইব্রেরিতে যারা আকৃষ্ট হয়েছে তাদের বেশিরভাগ আসলে ১৮-২৪ বছর বয়সী আরব পুরুষ। এই সাইটে বেশিরভাগ ট্রাফিক এসেছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে, বিশেষ করে ইউটিউব থেকে।
আইএসডি তাদের গবেষণায় দেখেছে, ইসলামিক স্টেটের এরকম গোপন তথ্যভান্ডার অভিনব কিছু নয়।
অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চরমপন্থী গোষ্ঠীরও একই ধরণের ছোট ছোট তথ্য ভান্ডার আছে। এরাও বিকেন্দ্রীকৃত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এর জন্যে।
গবেষকরা এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিসকে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন, লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃপক্ষকেও তারা বিষয়টি জানিয়েছেন।
নিউ ইয়র্কের কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোন মন্তব্য করেন নি।
তবে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং স্পেশালিস্ট অফিসাররা এখন ব্যাপারটি খতিয়ে দেখছেন।
সুত্র : বিবিসি বাংলা