হোম অন্যান্যশিক্ষা সংশোধন হচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, কঠোর শর্ত আরোপের প্রস্তাব

সংশোধন হচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, কঠোর শর্ত আরোপের প্রস্তাব

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 34 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম আরও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ২০১০ সালের আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হচ্ছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, আইন লঙ্ঘন করলে অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে এই জরিমানার পরিমাণ ১০ লাখ টাকা। সংশোধিত আইনের প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মেয়াদের মধ্যেই স্থায়ী সনদ নিতে হবে, না নিলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে এসব প্রস্তাবনা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও আইনের সংশোধনী খসড়া সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সূত্র জানায়, খসড়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আইনের সংশোধন প্রক্রিয়া চলমান। আরও কিছু কাজ বাকি আছে। এখনও খসড়া চূড়ান্ত হয়নি।’

প্রসঙ্গত, দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৯২ সালে। ওই সময় দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল মাত্র দুটি। পরবর্তী সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ২০১০ সালে নতুন করে আইন জারি করা হয়। বর্তমানে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১৬টি। এত সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১৫ বছর আগের আইনে নিয়মের মধ্যে পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছে সরকার। আর সে কারণেই আইন সংশোধন করা হচ্ছে।

স্থায়ী সনদ না নিলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ

আইনের অধীনে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে সাময়িক অনুমতির (সাত বছর) মেয়াদের মধ্যেই স্থায়ী সনদ গ্রহণ করতে হবে। এ মেয়াদের মধ্যে স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন করতে ব্যর্থ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে সংশোধিত আইনে। সংশোধন প্রস্তাবে অনুযায়ী স্থায়ী সনদ না নিলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রথম সাত বছর এবং নবায়নের পাঁচ বছর মোট ১২ বছরের মধ্যে স্থায়ী সনদ নিতে হবে।

ব্যাংকে জমার পরিমাণ বাড়ছে

বিদ্যমান আইনে প্রস্তাবিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা, অন্য মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য ৩ কোটিসহ অন্য এলাকার জন্য দেড় কোটি টাকা তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখার শর্ত রয়েছে। কিন্তু আইনের সংশোধন প্রস্তাবে টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য ৮ কোটি, অন্য মেট্রোপলিটনের জন্য ৫ কোটি ও অন্য এলাকার জন্য ৩ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা রাখার কথা বলা হয়েছে।

ক্যাম্পাস স্থাপনে লাগবে ৫ একর নিষ্কণ্টক জমি

বিদ্যমান আইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য ১ একর ও অন্য এলাকার ক্ষেত্রে ২ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতা ছিল। সংশোধিত আইনে যেকোনও এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপনের ক্ষেত্রে ৫ একর নিষ্কণ্টক জমি থাকার কথা বলা হয়েছে।

উপাচার্য নিয়োগ পেতে লাগবে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা

উপাচার্য (ভিসি) নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি ডিগ্রির পাশাপাশি ১০ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং গবেষণা বা প্রশাসনিক কাজে ২০ বছরের অভিজ্ঞতার শর্ত রয়েছে। কিন্তু সংশোধিত আইনে ভিসি নিয়োগের জন্য ২০ বছর স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে।

একই সঙ্গে শিক্ষাজীবনের কোনও স্তরে তৃতীয় শ্রেণিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ভিসি পদের যোগ্য না হওয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশোধন খসড়ায় একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি উপাচার্য থাকতে পারবেন না। শিক্ষাগত যোগ্যতায় পরিবর্তন আনা হয়েছে প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার পদে নিয়োগের জন্যও। সংশোধিত আইনে ভিসি পদ শূন্য হওয়ার চার মাস আগে যোগ্য তিন জন শিক্ষাবিদের প্রস্তাব সরকারের কাছে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

আইন না মানলে দণ্ড ৫০ লাখ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন না মানলে শাস্তির মাত্রাও বাড়ানো হয়েছে। সংশোধন প্রস্তাবে কোনও ব্যক্তি আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে অভিযুক্ত ব্যক্তি অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর কারাদণ্ড অথবা ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। বিদ্যমান আইনে যা রয়েছে ১০ লাখ টাকা।

যৌন হয়রানি প্রতিরোধের বিধান যুক্ত হচ্ছে

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে অন্য কমিটির পাশাপাশি যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নির্ধারিত কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে সংশোধিত প্রস্তাবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন