হোম খুলনাসাতক্ষীরা সাতক্ষীরার সড়ক ও জনপদ বিভাগের অফিস সহকারী বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ, ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে দাবি রবির

সাতক্ষীরার সড়ক ও জনপদ বিভাগের অফিস সহকারী বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ, ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে দাবি রবির

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 94 ভিউজ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার সড়ক ও জনপদ বিভাগের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নুর ইসলাম রবির বিরুদ্ধে সরকারী জমিতে মসজিদের জানাজা নামাজের জায়গা দেয়ার নাম করে টাকা নেয়া, দুই ভাইকে মাস্টাররোলে চাকরি দেয়া, টেন্ডার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করা, নামে বেনামে সম্পদের মালিক বনে যাওয়াসহ নানা অনিয়ম দূর্ণীতির অভিযোগ উঠোছে। যা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও অরলাইনে প্রকাশ হয়েছে। মসজিদের টাকা নেয়ার ঘটনায় মসজিদ কমিটি ও স্থানীয় মুসল্লিরা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সাতক্ষীরার নির্বাহি প্রকৌশলী বরাবর গত ১৮ সেপ্টেম্বর-২০২৪ তারিখে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে, এসব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় তিনি জড়িত নন বলে দাবী করেন।

লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ইটাগাছা কুখরালী দারুস সালাম জামে মসজিদের পাশে সড়ক ও জনপদ বিভাগের পরিত্যাক্ত জায়গায় জানাজা নামাজের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে মসজিদ কমিটির কাছে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন তিনি। দাবী অনুযায়ী মসজিদ কমিটির লোকজন তাকে অগ্রিম ৬০ হাজার টাকাও প্রদান করেন। এরপর তিনি তার অফিসের অফিস সহায়ক ওবায়দুল্লাহসহ স্থানীয় লোকজন দিয়ে ওই জায়গায় থাকা পরিত্যক্ত দুটি ভবন ভাংচুর করে টিন, চাল, জানালা, ইটপাটকেল খুলে নিয়ে আসেন। যার ভিডিও মসজিদ কমিটির কাছে রয়েছে। তার দাবীকৃত বাকি ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় রবি প্রভাব খাটিয়ে ওই ঘর ভেঙে টিনের চাল ও ইটপাটকেল খুলে নেয়ার অভিযোগে থানায় উল্টো মসজিদ কমিটি ও স্থানীয় লোকজনের নামে লিখিত অভিযোগ করেন। এদিকে, এই মিথ্যা অভিযোগ হাত থেকে পরিত্রান পেতে মসজিদ কমিটি ও স্থানীয় মুসল্লিরা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সাতক্ষীরার নির্বাহি প্রকৌশলী বরাবর গত ১৮ সেপ্টেম্বর-২০২৪ তারিখে একটি লিখিত আবেদন করেন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে দাদার সুত্রে সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি পান রবি। এরপর আর তাকে পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। বিগত সরকারের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার দুই ভাই হাসান ও সাজুকে (মাস্টার রোলে) সেখানে চাকুরি দিয়েছেন। এদের একজন আপন ভাই, অপর জন খালাতো ভাই। তিনিসহ তার দুই ভাই ঠিকাদার ম্যানেজ করে গড়ে তুলেছেন বিশাল সিন্ডিকেট। নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অফিসকে জিম্মি করে ওটিএম টেন্ডারে (ইÑভেলুয়েশনে) সিন্ডিকেটের লাইসেন্স কাজ পাইয়ে দেয়ার নাম করে বড় অংকের কমিশন নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে বিগত সরকারের দোসর তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী রবি সাতক্ষীরা সড়ক বিভাগের দায়িত্বে থাকা পূর্বের অফিসারদের ম্যানেজ করে বড় বড় লাইসেন্স ভাড়া করে নিজেরাই টেন্ডারবাজি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তিনি নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন। তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের গোপনে রেট কোড বিতরনসহ অফিসের গোপন তথ্য সরবরাহেরও অভিযোগও রয়েছে।

অফিস সহকারী নুর ইসলাম রবি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ২০১৩ সালের পর থেকে সকল টেন্ডার ই-টেন্ডারের মাধ্যমে অনলাইনে টেন্ডার সাবমিট হয়েছে। এখানে দূর্নীতির কোন সুযোগই নেই। যা অনিয়ম হয়েছে ২০১৩ সালের আগে। এখানে গ্রæপিং রয়েছে। আমি গ্রæপিং এর শিকার। আমি বাড়ি বসে চাকরী করছি এটা তারা চাইনা। বরিশালের কিছু অফিসার এখানে চাকরী করছেন যারা আমাকে হিংসা করেন। কারন তারা দুর থেকে এসে চাকরী করছেন। মসজিদের জানাজা নামাজের জায়গা দেয়ার নাম করে টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি জানান, মসজিদ কমিটির কাছ থেকে টাকা নেয়ার প্রশ্নই আসেনা। বরং স্থাণীয় লোকজন গত ৫ আগস্টের পরে কুখরালী মোড়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি জায়গা রয়েছে যেখানে টিনের দুটি ঘর ছিল। যা তারা ভাংচুর করে ইটপাটকেল ও টিন খুলে নিয়েছে। এঘটনায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে থানায় তাদের নামে অভিযোগ দেয়া হয়। ওই অভিযোগ থেকে তারা বাঁচার জন্য আমাদের অফিসে যাই। এসময় আমাদের অফিসাররা উল্টো আমার বিরুদ্ধে তাদের কাছে অভিযোগ করতে বলেন। অভিযোগ করলে তারা তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করে নেবেন বলে জানান। আর সরকারী খাস জমিতে দোকান পাট করার বিষয়ে তিনি জানান, ১৯৮১ সালে আমার বাবা সড়কের ধারে জায়গা কিনে সেখানে দুইতলা বাড়ি করেন ও সামনে দোকান করেছিলেন। কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগের সম্প্রতি জরিপে ওই দোকানের অল্প কিছু অংশ পড়লে সেটা আমরা ভেঙে নেই। এছাড়া তার দুই ভাইকে মাস্টার রোলে চাকরী দেয়ার ব্যাপারে বলেন, একসময় এখানে অনেক কাজ হয়েছিল। সেসময় জনবল কম ছিল। এখানে কর্মরত অফিসাররা ওই সময় কিছু লোকজন মাস্টার রোলে নিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ জানান, বিষয়টি লোক মুখে শুনেছি। তাকে নজর দারিতে রাখা হয়েছে। কোন রকম অনিয়ম দূর্ণীতির প্রমান পেলে বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে, মসজিদ কমিটির সাথে টাকা লেনদেনের এখনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন