হোম আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে বড় সিদ্ধান্ত নিলেন পুতিন

পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে বড় সিদ্ধান্ত নিলেন পুতিন

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 9 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রুশ ভূখণ্ডে হামলায় এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত মিসাইল ব্যবহার করতে পারবে ইউক্রেন। দূরপাল্লার মিসাইল ব্যবহারে ইউক্রেনের ওপর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার ফলে কিয়েভ এই সুবিধা পেলো। কিন্তু এরিই মধ্যে পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার দেশটির নতুন পারমাণবিক নীতিতে অনুমোদন দিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়ার ওপর কোনো প্রচলিত মিসাইল হামলা হলে, বিশেষত যদি সেটি কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সমর্থনে হয়, তাহলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বিবেচনা করবে।

রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন এই নীতি রাশিয়ার বিদ্যমান পারমাণবিক নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মিসাইল দেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিলো মস্কো।

পাঁচ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানুয়ারিতে তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে কিয়েভকে মার্কিন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের ওই সবুজ সংকেত দেন বাইডেন। ক্ষুব্ধ ক্রেমলিনের অভিযোগ, ওয়াশিংটন ‘আগুনে ঘি’ ঢালছে।

২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাশিয়া পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহারে বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানালো। নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, ড্রোন, প্রচলিত মিসাইল বা অন্যান্য সামরিক বিমানের মাধ্যমে চালানো কোনো হামলাও রাশিয়ার পারমাণবিক জবাবের শর্ত পূরণ করতে পারে। একই সঙ্গে, কোনো জোটের সদস্য রাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর আগ্রাসন চালালে, সেটিকে পুরো জোটের পক্ষ থেকে আক্রমণ হিসেবে গণ্য করবে মস্কো।

নতুন নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, রাশিয়া কোনো অ-পারমাণবিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, যদি সেই রাষ্ট্র পারমাণবিক শক্তিধর কোনো দেশের সমর্থন পায়। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, অ-পারমাণবিক রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আক্রমণ যদি কোনো পারমাণবিক শক্তিধরের সহযোগিতায় ঘটে, তাহলে সেটিকে যৌথ আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

তিনি এটিকে ‘বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। পেসকভ জানান, এ নীতিমালা রাশিয়ার ওপর ‘বড় ধরনের বিমান হামলা’ হলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে অনুমতি দেয়। এমনকি, যদি প্রচলিত অস্ত্রও ব্যবহৃত হয়, তবু পারমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে মস্কো।

তিনি বলেন, রাশিয়া বরাবরই পারমাণবিক অস্ত্রকে প্রতিরোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং এটি কেবল তখনই ব্যবহার করা হবে, যখন রাশিয়া প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হবে। নতুন নীতিমালার আওতায় রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশও মস্কোর পারমাণবিক সুরক্ষার আওতাভুক্ত থাকবে।

পেসকভ এটিকে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি একটি সতর্কবার্তা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের ওপর আক্রমণ করতে চাওয়া যে কেউ যেন ভালোভাবে চিন্তা করে নেয়। এই ঘোষণাটি এমন সময়ে এলো যখন ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মার্কিন মিসাইল ব্যবহার করে রাশিয়ায় হামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া এটিকে ‘সমষ্টিগত পশ্চিমের যুদ্ধ ঘোষণা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহারে ক্রেমলিনের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এমন এক সময় এলো, যখন ইউক্রেন যুদ্ধ দু’বছর ছয় মাস অতিক্রম করেছে এবং রাশিয়া-পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে উত্তেজনা ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল সংকটের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে; যা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে গোটা বিশ্ব।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন