হোম অর্থ ও বাণিজ্য সহিংসতা প্রভাব ফেলেছে রেমিট্যান্স প্রবাহেও

সহিংসতা প্রভাব ফেলেছে রেমিট্যান্স প্রবাহেও

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 28 ভিউজ

বাণিজ্য ডেস্ক:

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সপ্তাহব্যাপী সহিংস পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে দেশের প্রবাসী আয়েও। সহিংসতার কারণে ১৮ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা ইন্টারনেট শাটডাউন এবং সহিংসতা দমনের জন্য সরকারের কারফিউ জারি ও সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে প্রায় এক সপ্তাহ স্থবির ছিল দেশের আর্থিক খাত। গত ১৯ থেকে ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাংকিং কার্যক্রম চলে মাত্র একদিন।

সহিংসতা প্রতিহত এবং দুর্বৃত্তদের দমন করতে ১৯ জুলাই রাতে কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। পাশাপাশি ইন্টারনেট শাটডাউনের কারণে অনলাইন ব্যাংকিংও বন্ধ ছিল। ২৪ জুলাই বুধবার ব্যাংক চালু হলেও লেনদেন চলে ১১টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত। ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণে প্রবাসীরা বিদেশ থেকে অর্থ প্রেরণ করলেও তা বাংলাদেশের ব্যাংকিং চ্যানেলে আসতে পারেনি। এ সবের প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্সে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ থেকে ২৪ জুলাই এই ছয়দিনে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে মাত্র ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অথচ চলতি মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। অর্থাৎ চলতি মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, ১৮ থেকে ২৪ জুলাই এই ছয়দিনে সম্মিলিতভাবে রেমিট্যান্স এসেছে তার থেকে কম।

অবশ্য চলতি মাসের প্রথম ১৮ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহের হার গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশ ভালোই ছিল। গত বছর ১ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১২৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অপরদিকে চলতি বছরের একই সময় রেমিট্যান্স এসেছে ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৩ কোটি ডলার বেশি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সহিংসতার কারণে আর্থিক কার্যক্রম বন্ধ থাকার প্রভাব পড়তে পারে জুলাই মাসের সার্বিক রেমিট্যান্স প্রবাহের চিত্রে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ জলাই পর্যন্ত দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫০ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই আয় দাঁড়িয়েছিল ১৫৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

অবশ্য ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবং ইন্টারনেট ফিরে আসায় ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, গত এক সপ্তাহে জমে থাকা রেমিট্যান্সগুলো রোববার থেকে ব্যাংকগুলোতে আসতে শুরু করবে। যে কারণে মাসের বাকি কয়েকটি দিনে রেমিট্যান্স আসার গতি বেড়ে যেতে পারে। রবি ও সোমবার বোঝা যাবে রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রকৃত চিত্র।

রেমিট্যান্স প্রবাহের এই ছন্দপতন সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক। তারপর এ ব্যাপারে আমরা বলতে পারবো।’

এই সাতদিনে রেমিট্যান্স আসা কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ইন্টারনেট শাটডাউন ও কারফিউর কারণে সবকিছুই তো প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল। এর প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। এ কারণেই গত এক সপ্তাহে প্রবাসী আয় কম এসেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তা আগের অবস্থায় ফিরে যাবে, আশা করি।

দেশে প্রবাসী আয় না পাঠাতে প্রবাসীদের মাঝে এক ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছে একটি মহল। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটি তো বাংলাদেশ ব্যাংকের বিষয় নয়। তাই এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’

তবে প্রবাসী আয় বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময়ই সচেষ্ট রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন