জাতীয় ডেস্ক:
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় অংশ নেওয়া ৭ জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে এখনও এই হত্যাকাণ্ডের মোটিভ নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। তবে ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক দুই কারণ আমলে নিয়েই তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, এমপি আনার হত্যার কিলিং মিশনে সাতজন দায়িত্ব পালন করেছে। এই সাতজনসহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল গ্রেফতার করা হয় ফয়সাল ও মোস্তাফিজকে। ফয়সালই এমপি আনারকে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করেন বলে জানান হারুন অর রশীদ।
তিনি আরও জানান, এ দুজন সংসদ সদস্য আনার খুনে সরাসরি অংশ নেন। খুনের ১১ দিন আগে তারা বাংলাদেশ থেকে ভারতের কলকাতায় গিয়ে সেখানকার নিউমার্কেট এলাকায় একটি হোটেলে ওঠেন। খুনের ছয় দিন পর তারা ঢাকায় ফিরে আত্মগোপনে চলে যান। তাদের আজ আদালতে তোলার পর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে এখন পর্যন্ত যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী। বুধবার (২৬ জুন) শেষ পর্যন্ত সীতাকুণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদেরও গ্রেফতার করে ডিবি।
বুধবার বিকেলে খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের কয়েকটি দুর্গম পাহাড়ে হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতারের দাবি করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই ছদ্মবেশে সেখানে অবস্থান করছিল আসামিরা। গ্রেফতার হওয়ার পর দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি ডিবির।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। পরে তার খোঁজ পাওয়া না গেলে গত ১৮ মে ভারতে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন এমপি আনারের পরিচিত ও ভারতের বরানগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস। এরপর এমপি আনারের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে কলকাতা পুলিশ। কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে বলে গত ২২ মে জানায় ভারতীয় পুলিশ। পরে ওইদিন রাতেই ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। এরপর থেকে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য।
গত ২৮ মে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিবা গার্ডেনের সেপটিক ট্যাংক থেকে কিছু মাংস উদ্ধার করে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। ধারণা করা হচ্ছে, তা এমপি আনারের মরদেহের খণ্ডিত দেহাংশ। পরে গত ৯ জুন সকালে কলকাতার বাগজোলা খাল থেকে উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি হাড়।