হোম অর্থ ও বাণিজ্য চিনিতে মাত্রাতিরিক্ত শুল্কহারের বোঝা টানতে হচ্ছে ভোক্তাকে!

চিনিতে মাত্রাতিরিক্ত শুল্কহারের বোঝা টানতে হচ্ছে ভোক্তাকে!

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 66 ভিউজ

বাণিজ্য ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট সর্বনিম্ন থাকার পরও মাত্রাতিরিক্ত শুল্কহারের কারণে দেশের বাজারে চিনির কেজি ১৪০ টাকা। প্রতিকেজি পরিশোধিত চিনিতে ৪৮ টাকা এবং অপরিশোধিত চিনিতে ৪৫ টাকা শুল্ক আদায় করছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

দেশীয় চিনিশিল্পকে রক্ষায় বাড়তি শুল্কহার আরোপ করা হলেও তা চাহিদার মাত্র ৫ শতাংশ পূরণ করছে। বাকি ৯৫ শতাংশ ২০ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানি হয়। এ অবস্থায় আমদানি শুল্ক কমিয়ে আনার দাবি মিল মালিকসহ ব্যবসায়ীদের।

বিশ্ববাজারে বর্তমানে অপরিশোধিত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ মার্কিন ডলার। আর পরিশোধিত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ মার্কিন ডলারে। সে অনুযায়ী দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে প্রতিমণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৪৫০ টাকায়।

বাংলাদেশে বছরে ২২ লাখ মেট্রিক টন চিনির চাহিদার ২০ লাখ মেট্রিক টনই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। আর ৬০ থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন চিনির জোগান আসে দেশি আখ থেকে।

চাহিদা অনুযায়ী চিনি আমদানিতে কোনো ঘাটতি না হলেও কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না চিনির দাম। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে না আসার মূল কারণ অতিরিক্ত শুল্কহার।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক আলমগীর পারভেজ বলেন, অতিরিক্ত শুল্কহারের কারণে কমেছে চিনি আমদানি। অবৈধ চিনিতে বাজার এখন সয়লাব। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দেশের ব্যবসায়ীরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যানুযায়ী, প্রতি মেট্রিক টন পরিশোধিত চিনি আমদানির ক্ষেত্রে ৬ হাজার টাকা কাস্টমস ডিউটি, ৩০ শতাংশ রিয়েল ডিউটি, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৫ শতাংশ অ্যাডভান্স ট্যাক্স এবং ৫ শতাংশ এআইটি আদায় করা হয়।

সে অনুযায়ী, প্রতি কেজি পরিশোধিত চিনিতে ৪৮ টাকা ৩৫ পয়সা শুল্ক আদায় করছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আর অপরিশোধিত চিনিতে শুল্ক আদায় করা হচ্ছে ৪৫ টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাজিউর রহমান মিয়া বলেন, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে একটি পণ্যের আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ীই দেশীয় চিনি শিল্পের কথা মাথায় রেখে এ পণ্যের শুল্ক নির্ধারণ করেছেন নীতিনির্ধারকরা।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে সময় টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুব্রত আচার্য জানান, ভারতের বাজারে মাত্র ৪৮ রুপিতে মিলছে এক কেজি চিনি, যা বাংলাদেশি টাকায় ৬৭ টাকা। উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি শুল্কের জটিলতা না থাকায় একেবারে কমমূল্যে চিনি বিক্রি হচ্ছে ভারতে।

এদিকে রোজার ঈদের আগে থেকে সিলেট-মেহেরপুর-ঝিনাইদহ সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে চোরাচালান হয়ে দেশের প্রতিদিনের চাহিদার অর্ধেকের বেশি ৪ হাজার মেট্রিক টন চিনি বাজারে আসছে। অথচ মিলগুলোতে হাজার হাজার মেট্রিক টন অবিক্রীত চিনি পড়ে থাকছে।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আর এন এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহমুদুল হক লিটন বলেন, অবৈধ পথে দেশে চিনি আসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকারও।

চলতি অর্থ বছরের সাড়ে দশ মাসে ১২ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা মূল্যের ১৭ লাখ ৬৩ হাজার মেট্রিক টন চিনি আমদানি হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন