যশোর অফিস :
আশে-পাশে নেই কোন সড়ক। খালে নেই পানি। দীর্ঘদিন পানি প্রবাহ না থাকায় খালটি মরা খালে পরিণত হয়েছে অনেক আগেই। স্থানীয়দের যাতাযাতর জন্য প্রয়োজনীয়তাও নেই। এরপরও মরা খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে কালভাট। মরা খালের মাঝে অপ্রশস্ত কালভার্টটি কেন নির্মাণ করা হয়েছে সেই প্রশ্ন স্থানীয়দের।
তাদের প্রশ্ন, ২০ থেকে ২৫ ফুট দূরেই কালভাট থাকার পরও কেন এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। খালের মধ্যে কালভার্টটি নির্মাণ করে দুই পাশে কোনো সংযোগ সড়ক করা হয়নি। তাই এটি স্থানীয়দের কোনো উপকারে আসছে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উন্নয়ন কর্মসূচির টাকা অপচয় করতেই করা হয়েছে অপ্রয়োজনীয় কালভার্টটি। জেলার চৌগাছা উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের হায়াতপুর গ্রামে মর্জাদ বাঁওড়ের পাশে ভোয়াখালী খালের ওপর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্মাণ করা হয়েছে কালভার্টটি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় এক মিটার প্রশস্ত ও পাঁচ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা।
ইউপি সদস্য আরও বলেন, স্থানীয় কৃষকদের ফসল বাড়িতে নেওয়ার জন্য ভোয়াখালী খালের ওপর একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সুপারিশ করি। পরে উপজেলা পরিষদ থেকে দরপত্র আহবানের মাধ্যমে সেখানে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু কালভার্টের কোনো পাশেই মাটি ভরাট করা হয়নি। যার ফলে এটি কৃষকের কোনো উপকারে আসছে না।
ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান লাল বলেন, খালটির দুই পাশেই রাস্তা আছে। কৃষকদের সুবিধার কথা চিন্তা করেই ওই স্থানে একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়। সে মোতাবেক উপজেলা পরিষদ থেকে কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। কালভার্টের দুই পাশে মাটি ফেলা হলে তখন এটি ব্যবহারের উপযোগী হবে।
স্থানীয় কৃষক আকিদুল ইসলাম, রহমত আলী ও খাইরুল ইসলাম বলেন, খালটি এই বর্ষা মৌসুমেও শুকনো। এ কালভার্টের কোনো প্রয়োজন ছিল না। কারণ, নতুন বানানো কালভার্টের মাত্র ২০ থেকে ২৫ ফুট দূরেই খালটির ওপর ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের নির্মাণ করা একটি সেতু রয়েছে। যাতায়াতে সেটিই ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া কালভার্টটির প্রস্থ এত কম যে, তার দুই পাশে সংযোগ সড়ক করা হলে বন্ধ হয়ে যাবে খাল।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল মতিন বলেন, পাতিবিলা ইউনিয়ন পরিষদের চাহিদার বিপরীতে কালভার্টসহ আরও দুটি প্রকল্পে চার লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। টাকা খরচ করার জন্য অপ্রয়োজনীয় এই কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে এলাকাবাসীর এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কালভার্টটি দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল বারীকে। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল বারিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এভাবে লেগে থাকলে তো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করা সম্ভব হবে না।’