আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইউক্রেনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে সহযোগিতা করছে ব্রিটিশ ও ফরাসি সেনারা। এতদিন গোপন থাকলেও বিষয়টি সম্প্রতি ফাঁস করে দিয়েছে জার্মানি। আর এতেই ওলাফ শলৎজের সরকারের ওপর ক্ষেপেছে যুক্তরাজ্য।
জার্মানির সমালোচনা করে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির এমপি এবং যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা বিষয়ক ডিফেন্স সিলেক্ট কমিটির সাবেক প্রধান টোবিয়াস এলউড বলেছেন, বার্লিন ইউক্রেনে ব্রিটিশ সেনাদের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদন মতে, টোবিয়াস বলেছেন, এটা জার্মানির গোয়েন্দা তথ্যের একটি স্পষ্ট অপব্যবহার। তারা ইউক্রেনকে তাদের নিজস্ব দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহ করতে চায় না। বিষয়টি থেকে মনযোগ সরানোর জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এমন তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রশাসনকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছে আসছে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটো। তবে বরাবরই সরাসরি সেনা পাঠানোর বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন জোট নেতারা।
চলতি সপ্তাহে (২৬ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইঙ্গিত দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তবে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ তার বিরোধিতা করে।
সম্প্রতি যুদ্ধক্ষেত্রে পিছু হটছে ইউক্রেন। রাশিয়ার কাছে প্রতিদিনই ভূমি হারাচ্ছে দেশটি। এমন অবস্থায় জার্মানির কাছে দূরপাল্লার টরাস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়ে আসছে কিয়েভ।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা গত মাসে বলেন, মস্কোতে হামলার জন্য নয় বরং ইউক্রেনের ভূখণ্ডে রাশিয়ার সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করার জন্য এই ক্ষেপণাস্ত্রে প্রয়োজন।
শক্তিশালী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পাল্লা ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি এবং সেতুর মতো লক্ষ্যবস্তু বা বাঙ্কারের মতো শক্ত ও মাটির নিচের বস্তু ধ্বংসে সাফল্যের জন্য বেশ পরিচিত।
তবে ইউক্রেনকে বিশেষ ওই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার কথা নাকচ করে দেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। গত সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-কে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে শলৎজ বলেন, আমরা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ করতে চাই। সেই সঙ্গে এই যুদ্ধ যাতে রাশিয়া ও ন্যাটোর যুদ্ধে পরিণত না হয় সেটাও নিশ্চিত করতে চাই।
এরপর জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে হলে তার ব্যবহার বা মোতায়েনের জন্য জার্মান সেনাও পাঠাতে হবে। যেমনটা পাঠিয়েছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। জার্মান সেনারা ব্রিটিশ ও ফরাসি সেনাদের অনুসরণ করবে না।
জার্মান চ্যান্সেলরের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার প্রতিক্রিয়া জানান ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা টোবিয়াস এলউড। ওলাফ শলৎজের সমালোচনা করেছেন নরবার্ট রটজেন নামে আরেক আইনপ্রণেতাও। রটজেন বলেন, ইউক্রেনে ব্যবহৃত দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনায় ফ্রান্স ও ব্রিটেনের জড়িত থাকার বিষয়ে জার্মান চ্যান্সেলরের বক্তব্য সম্পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞানহীন।