হোম আন্তর্জাতিক ৫৯ বছর ফের সচল মুর্শিদাবাদ-রাজশাহী নৌপথ

৫৯ বছর ফের সচল মুর্শিদাবাদ-রাজশাহী নৌপথ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 87 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ফের চালু হলো মুর্শিদাবাদ-রাজশাহী আন্তর্জাতিক নৌপথ। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রম ও বাণিজ্য প্রটোকল (পিআইডাব্লিউ টিঅ্যান্ডটি) ১৯৭২ এবং সংশোধনী ২০১৬/২০২০-এর আওতায় ১৯৬৫ সালের পর নতুন করে নৌপথটি চালু করা হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে ৫৯ বছর পর নবাব নবাব সিরাজউদ্দৌলার শহর মুর্শিদাবাদের সঙ্গে আবারও যুক্ত হলো বাংলাদেশের রাজশাহী শহর।

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভারত ও বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট বিভাগের মন্ত্রীরা যৌথভাবে এই নৌপথ উদ্বোধন করেছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের মায়াবন্দরে উপস্থিত ছিলেন জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ও কলকাতায় বাংলাদেশ উপ দূতাবাসের বাণিজ্য সচিব মোহাম্মদ আরিফ।

অন্যদিকে বাংলাদেশের গোদাগাড়ির সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরে উপস্থিত ছিলেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।

উদ্বোধনের আগেই রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে ভারতের মুর্শিদাবাদে এই নৌপথে পণ্য আনা–নেয়া শুরু হয়েছে। গত রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টার দিকে একটি খালি জাহাজ মায়াবন্দরের উদ্দেশে সুলতানগঞ্জ ছেড়ে যায়।

জাহাজটির সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পাথর নিয়ে আসার কথা রয়েছে। উদ্বোধনের পর সাড়ে ১১ টন গার্মেন্টস তুলাবাহী নৌযান সুলতানগঞ্জ থেকে মুর্শিদাবাদের মায়াবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।

খবরে আরও বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা নৌপথের উদ্বোধন ঘিরে সুলতানগঞ্জ এলাকায় বিপুল মানুষের সমাগম হয়। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, এই পথ চালুর ফলে স্থানীয়ভাবে ছোট-বড় ব্যবসার প্রসার ঘটবে।

মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে যাবতীয় কাজ শেষ হয়েছে। পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য তৈরি করা হচ্ছে রাস্তা। পল্টুনও তৈরি হয়েছে। নৌঘাটের শেড তৈরি করা হয়েছে।

১৯৬৫ সালের আগে ভারতের মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির মায়াবন্দর থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহীর গোদাগাড়ির সুলতানগঞ্জ পর্যন্ত নৌপথে পণ্য পরিবহন করা হতো। কিন্তু ওই বছর পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের কারণে নৌপথটি বন্ধ হয়ে যায়।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রম ও বাণিজ্য প্রটোকলটি ১৯৭২ সাল থেকে চালু রয়েছে। ২০১৬ ও ২০২০ সালে পিআইডাব্লিউ টিঅ্যান্ডটির প্রথম ও দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে চুক্তির ৫ ও ৬ নম্বর রুটটি বাংলাদেশের রাজশাহী থেকে আরিচা এবং মায়া থেকে ধুলিয়ান পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

এর ফলে ভারতীয় অংশে মায়া ও ধুলিয়ানকে এবং বাংলাদেশের অংশে রাজশাহী ও গোদাগাড়ি বা সুলতানগঞ্জকে নতুনভাবে পোর্ট অব কল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দুই দেশের বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নৌপথে ধুলিয়ান-মায়া ৪১ কিলোমিটার। মায়া-গোদাবাড়ি বা সুলতানগঞ্জ ২০ কিলোমিটার।

সুলতানগঞ্জ থেকে রাজশাহী ৩৬ কিলোমিটার। রাজশাহী থেকে আরিচার দূরত্ব ১৭৫ কিলোমিটার। সবমিলিয়ে নৌপথে ২৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ পুরো প্রটোকল রুটটি চালু সম্ভব হলে উভয় দেশ ব্যাপকভাবে এর ব্যবসায়িক উপযোগিতা পাবে বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন