আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) নেতা নওয়াজ শরিফের হেরে যাওয়া আসনের ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে।
প্রাথমিক ফলাফলে খাইবার পাখতুনখোয়ার মানসেহরা এনএ-১৫ আসনে ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে বড় ব্যবধানে হেরে গেলেও রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
পাকিস্তানের নির্বাচন নিয়ে শুরু থেকেই ছিল বিতর্ক। আর পশ্চিমা গণমাধ্যমে তো ভোটের আগেই বলে দেয়া হয়, নির্বাচনে জিতবেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিএমএল-এন নেতা নওয়াজ শরিফ। কিন্তু আলোচনায় থাকা সেই নওয়াজই হেরে যান পিটিআই সমর্থিত এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম সামা টিভি জানায়, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নওয়াজ শরিফ মানসেহরা এনএ-১৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা গাস্তাসাপের কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন।
শাহজাদা গাস্তাসাপ ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত প্রার্থী বলে জানায় পাকিস্তানের আরেক সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মানসেহরা এনএ-১৫ আসন থেকে পাওয়া অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা গেছে, শাহজাদা গাস্তাসাপ ৭৪ হাজার ৭১৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
আর মিয়া নওয়াজ শরিফ ৬৩ হাজার ৫৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন। এরপর আসনটিতে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ফলাফল স্থগিত করতে ইসিপিতে আবেদন করেন নওয়াজ শরিফ।
তার আইনজীবী দাবি করেন, ১২৫টি ভোটকেন্দ্র থেকে তাদের ফর্ম ৪৫ দেয়া হয়নি। তাদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছিল এবং একটি ভুল ফর্ম ৪৭ দেয়া হয়েছিল। সার্বিকভাবে এসব এলাকায় নির্বাচন স্বচ্ছ হয়নি বলে অভিযোগ করেন নওয়াজের আইনজীবী।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) ইসিপির চার সদস্যের একটি বেঞ্চে আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মানসেহরা আসনের ফলাফল ঘোষণা থেকে বিরত থাকতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে কারাগারে রেখে ও তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়নের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ২৬৬টি আসনের মধ্যে ২৬৫টির (একটিতে স্থগিত) পাশাপাশি প্রাদেশিক সরকার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয়।
পরদিন শুক্রবারের (৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে পুরো ফলাফল ঘোষণা করার কথা থাকলেও পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) তা পারেনি বা করেনি। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর ফল প্রকাশ শুরু হলেও তা ছিল খুবই ধীরগতিতে।
ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে রাজনৈতিক দলগুলো। উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও।
চারদিন পর রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত ২৬৫টি আসনের মধ্যে ২৬৪টির ফল প্রকাশ করা হয়। একটিতে স্থগিত করা হয়। সেই আসনটিই নওয়াজ শরিফের হেরে যাওয়া মানসেহরা এন-১৫।