হোম জাতীয় বেকারত্ব ঘোচাতে হা-মীম ট্রেনিং সেন্টারের উদ্যোগ

বেকারত্ব ঘোচাতে হা-মীম ট্রেনিং সেন্টারের উদ্যোগ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 84 ভিউজ

জাতীয় ডেস্ক:

ফরিদপুরের অল্প শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের বেকারত্ব ঘোচাতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠান হা-মীম গ্রুপ। পোশাক তৈরি ও ডিজাইনের কাজে দক্ষ করে গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করে তাদের দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

ফরিদপুর শহরতলীর পশরা গ্রামে মনোরম পরিবেশে একসঙ্গে একশ জন ব্যক্তির প্রশিক্ষণ দেয়া যায় এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে।

শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ট্রেনিং সেন্টারটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী।

পরে হা-মীম গ্রুপের চোয়ারম্যান মো. মোতালেব হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

তিনি বলেন, শত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। গত সংসদ নির্বাচন এটা প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ ছিল। দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীরা যড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বের কাছে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিয়েছেন। তার জ্বলন্ত প্রমাণ ফরিদপুরের নির্বাচন।

তিনি বলেন, ফরিদপুরের জনপ্রতিনিধিরা দেশের উন্নয়নের জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরি করছে। ফরিদপুরের এই গ্রামে হা-মীম গ্রুপের ট্রেনিং সেন্টার থেকে দক্ষ জনশক্তি দেশে ও বিদেশে কাজ করে দেশকে উন্নত করছে। ফরিদপুর সদর আসনের এমপি তার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রাখার প্রবণতা দেশকে উন্নত রাখার প্রধান হাতিয়ার। তিনি দেশের সকল রাজনীতিবিদের তাদের অঙ্গীকার রাখার জন্য অনুরোধ করেন। এতে সরকারের কাজ সহজ হবে, দেশের জনগণ উপকৃত হবে। পদ্মা সেতু খুলে দিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের দ্বার। এর সুফল পেতে শুরু করেছে ওই এলাকার মানুষ। তারই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুরে গত পাঁচ মাস আগে যাত্রা শুরু করে পোশাক শিল্পের দক্ষ কর্মী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অর্ধ শতাধিক নারী গার্মেন্টসে দক্ষ কর্মী হয়ে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ফরিদপুরের শিল্প কারখানা নেই, তাই অল্প লেখাপড়া করে করে কোনো কাজ পাচ্ছিলেন না, স্বল্প শিক্ষিত তরুণীরা। এ উদ্যোগ তাদের স্বপ্নকে ঘুরিয়ে দিয়েছে, পাল্টে দিয়েছে চিন্তা ধারা। প্রশিক্ষণ শেষে তারা অনেকেই এখন চাকরি করছেন, অনেকে ভাবছেন নিজেই হবেন উদ্যোক্তা।’

প্রশিক্ষণ নিয়ে ঢাকায় গার্মেন্টেসে কাজ করছেন মৌসুমী আক্তার। তিনি জানান, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছি। বিয়ের পর স্বামীর রোজগারে সংসার চলছিল না। খবর পাই বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এখান থেকে ৪০দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করি। পরে এখান থেকেই ঢাকার গার্মেন্টেসে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বেতন ভালোই পাচ্ছি, স্বামী, সন্তান নিয়ে খুব ভালো আছি।

প্রশিক্ষণ নিয়েছেন খালেদা আক্তার। তিনি বলেন, বাড়িতে বসে থাকতাম, এখান থেকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজে সেলাই মেশিন কিনে নিয়ে বাড়িতেই সেলাইয়ের কাজ করছি। যা রোজগার হচ্ছে পড়ালেখার খরচ হয়ে যাচ্ছে। ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত আয়শা খাতুনও নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ।

তিনি বলেন, পড়ালেখা করে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই হাতের কাজ শিখছি। প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হলে ভাবছি নিজেই কয়েকটি সেলাই মেশিন কিনে বাড়িতেই কাজ শুরু করবো। নারী উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখি, আশাকরি স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো।

শিল্প কারখানাবিহীন ফরিদপুরে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র জ্বেলে দিয়েছে আশার প্রদীপ। ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে এদের চাকরি মিলছে হা-মীম গ্রুপ অথবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে। এভাবে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দীর্ঘমেয়াদে চালিয়ে যাবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার।

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও হা-মীম গ্রুপের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, ‘আমার নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পূরনে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে গেরদার পশরা গ্রামে ট্রেনিং সেন্টার চালু করেছি। এখান থেকে প্রশিক্ষণ শেষে চাকরি দিয়ে তাদের গার্মেন্টেসে পাঠানো হবে। এখানে বিনামূল্যে ট্রেনিং করানো হবে। হা-মীম গ্রুপ, শারমিন গ্রুপসহ দেশের বিভিন্ন গার্মেন্টেসে চাকরি দেওয়া হবে। এছাড়া টেকনিক্যাল ও ড্রাইভিং প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

শিল্প কারখানাবিহীন ফরিদপুরে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র জ্বেলে দিয়েছে আশার প্রদীপ। গত পাঁচ মাসে তিন শতাধিক স্বল্প শিক্ষিত তরুণী প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ও বিদেশে কর্মরত রয়েছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন