আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, কিংবা বিশ্ব রাজনীতির কূটনৈতিক পদক্ষেপ নয়, এবার মস্কোর ‘ক্ষয়িষ্ণু জনসংখ্যা ইস্যু’ নিয়ে কথা বললেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার একটি আদর্শ পরিবার কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে নিজের অভিমত দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) কালিনিনগ্রাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে দেশের জনসংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে আলোচনার সময় পুতিন বলেন, দেশের ক্রমহ্রাসমান জনসংখ্যা বাড়াতে পরিবারগুলোর তিনটি সন্তান নেয়া উচিত।
যদি দু’জন মানুষ মিলে একজন শিশুর জন্ম দেয়া হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবে জনসংখ্যার হার নিম্নগামী হবে। অন্যদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অবশ্যই প্রত্যেকটি পরিবারকে তিনটি সন্তান নিতে হবে।
পুতিন আরও বলেন, একটি তুলনামূলক শিক্ষিত সমাজে জনসংখ্যাতত্ত্ব সংক্রান্ত জটিলতা বেশি হয়। কারণ এটা অস্বীকার করা যাবে না যে, মানুষ পরিবর্তন চায়। বর্তমান সমাজে একজন শিক্ষিত নারীর লেখাপড়া শেষ করে তার ক্যারিয়ার গড়তে গড়তে প্রথম সন্তান নেয়ার বয়স ৩০ পেরিয়ে যায়।
এরপর অবশ্যই তার দ্বিতীয় সন্তান নেয়ার সময়, সুযোগ বা মানসিক অবস্থা কোনটাই থাকে না। পুতিন বলেন, একটি নতুন পরিবার শুরু করা বিশেষ করে একজন নারীর জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং। কারণ তাকে একটি শিশু লালন-পালনের পাশাপাশি তার লেখাপড়া বা পেশাগত দায়িত্বও ঠিক রাখতে হয়।
‘‘এ কারণেই আমরা কমবয়সী দম্পতিদের উৎসাহিত করছি’’ পুতিন বলেন। একটি পরিবার সঠিক সময়ে শুরু করা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেও মন্তব্য করেন পুতিন।
২০২৩ সালে রাশিয়ায় জন্মগ্রহণ করে প্রায় ১২ লাখ ১৩ হাজার শিশু। ১৯৯৯ সাল থেকে শিশু জন্মগ্রহণের এত নিম্ন হার কখনও দেখা যায়নি। জাতীয় পরিসংখ্যাণ ব্যুরোর রোসটাটের তথ্যমতে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত জন্মহার ক্রমাগতভাবে নিম্নমুখী হবে রাশিয়ায়। যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করেন ভ্লাদিমির পুতিন।
পুতিন তার আলোচনায় বারবার একটি বিষয়ের ওপর জোর দেন তা হলো, রুশ দম্পতিদের আরও সন্তান নেয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করা।
২০১৮ সালের শুরুর দিকে রুশ কর্তৃপক্ষ একটি ‘ফ্যামিলি মর্টগেজ প্রোগ্রাম’ চালু করে। সর্বোচ্চ সুদের হার ৬ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়। যা বর্তমান বাজার হারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ কম।
বাড়ির মালিকানা কার্যকর করা এবং পরিবারকে আরও সন্তান ধারণ উৎসাহিত করার জন্য এই পোগ্রাম চালু করে রুশ সরকার। এই প্রোগ্রাম শুরুর পর ৪ লাখ ৫০ হাজারেও বেশি রুশ নাগরিক এই স্কিমের সুবিধার আওতায় এসেছে। রাশিয়ার জাতীয় অর্থনীতি অ্যাকাডেমির তথ্যমতে, এই মর্টগেজ প্রোগ্রামটি জনসংখ্যাতত্ত্বে ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে।
সূত্র: আর টি