হোম খুলনাসাতক্ষীরা সাতক্ষীরা-৪ আসনে নৌকার গলার কাঁটা নোঙ্গর! প্রচারে নেই অন্য প্রার্থীরা

হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা):

সাতক্ষীরা-৪ শ্যামনগর – কালিগঞ্জ (আংশিক) আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মাঠে প্রার্থী হয়েছেন ৭ জন। এদের মধ্যে হেভিওয়েট রয়েছেন ২ জন প্রার্থী তারা হচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস, এম আতাউল হক দোলন এবং অন্য দিকে জাতীয় পার্টির প্রয়াত প্রেসিডেন্ট লে: জেনারেল হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের সাবেক একান্ত সচিব বর্তমান বি, এন, এম ‘র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য এইচ,এম গোলাম রেজা।

এর মধ্যে এস, এম আতাউল হক দোলন দলীয় প্রতীক নৌকা এবং এইচ,এম গোলাম রেজা নোঙ্গর প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠ এক প্রান্ত: থেকে অন্য প্রান্ত: পর্যন্ত চষে বেড়ালেও অন্য প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় কোন খোঁজ মেলেনি।অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান, তৃণমূল বি,এন,পি’র সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে ডক্টর আসলাম মেহেদী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীক নিয়ে শফিকুল ইসলাম, ন্যাশনাল পিলস পাটির (এনপিপি) কাচি প্রতীকে মিজানুর রহমান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ একরামুল লড়ছেন আম প্রতীক নিয়ে।

নৌকা -নোঙ্গর প্রচার প্রচারণা নিয়ে মাঠে দৌড় ঝাপ দেখা মিললেও প্রচার প্রচারণায় নেই অনেক প্রার্থী এমনকি কোন ভোটার তাদের চিনেন না। শুধু নাম ফালাতে প্রার্থী হয়েছেন তারা। এমন কি কোন কোন প্রার্থী পোস্টার হ্যান্ড, বিল ছাপায়নি এখনো পর্যন্ত। নৌকা, নোঙ্গর ছাড়া এই সমস্ত প্রার্থীদের নিয়ে ভোটারদেরও তেমন কোন আগ্রহ নেই। যে কারণে এস,এম আতাউল হক দোলন এর নৌকা এবং এইচ,এম গোলাম রেজার নোঙ্গরের সঙ্গে দ্বিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে জয় পরাজয় নির্ভর করতে হবে দু’জনকে। নৌকার প্রার্থী এস, এম আতাউল হক দোলনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান৷ সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তার পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে উন্নয়নের নানান প্রতিশ্রুতির উন্নয়নের ডালা সাজিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

তবে বিগত দু বারের সংসদ সদস্য শ্যামনগর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস, এম জগলুল হায়দারের বিগত সময়ে নানান উন্নয়ন মুলক কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি নিয়ে ভোটারদের মাঝে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর। সংসদ সদস্য এস, এম জগলুল হায়দারের তৈরি করা বিভিন্ন প্রহসন মূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো নিয়ে চলছে ভোটারদের মাঝে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। তারপরও এখনো পর্যন্ত সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোটের মাঠে প্রচার প্রচারণায় দেখা মিলেনি সংসদ সদস্য শ্যামনগর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস, এম জগলুল হায়দারের। তবে নৌকার পক্ষে শ্যামনগর -কালিগঞ্জ উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীরা নিরলস ভাবে ভোটারদের দ্বারে -দ্বারে ভোট ভিক্ষায় প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছে। আওয়ামী লীগের নিজস্ব ভোটব্যাংক সহ সাধারণ মানুষের ভোটেই তারা জয় লাভের আশাবাদী আওলীগ প্রার্থীর নৌকা প্রতীক। অন্যদিকে জাতীয় পার্টিতে থাকতে প্রয়াত ও প্রেসিডেন্ট হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের বদৌলতে ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে এইচ, এম গোলাম রেজা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন । ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের সঙ্গে ব্যবসা এবং আর্থিক টাকা পয়সা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ালে এইচ,এম গোলাম রেজা কে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এরপর দলবিহীন অবস্থায় ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে এল,ডিপির কুলা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের আগের দিন সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ এর অনুরোধে এইচ,এম গোলাম রেজাকে মহাজোটের প্রার্থী থেকে সরিয়ে দিয়ে ওই রাতেই পুনরায় দলীয় প্রতীক আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়ে এস,এম জগলুল হায়দার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেই থেকে মহাজোট তৈরীর অন্যতম দাবীদার দাবি করে বিভিন্ন দলের দ্বারে দ্বারে ঘুরে শেষ পর্যন্ত বি, এন এম’র নোঙ্গর প্রতীক নিয়ে আবারো তার সংসদ সদস্য পদ পুনরুদ্ধারের জন্য মাঠ চোষে বাড়াচ্ছেন। তবে তার দলীয় কোন নেতাকর্মী না থাকলেও জাতীয় পার্টির শ্যামনগর এবং কালীগঞ্জের কিছু সুবিধাভোগী নেতা ছাড়া আর কাউকে দেখা মেলেনি। তবে তিনি একজন সৎ যোগ্য প্রার্থী হিসেবে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকার এবং নিজেকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনিও শতভাগ আশাবাদী এবারের সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের মুকুট তিনিই পরবেন।

তিনি আরো দাবি করেন, তিনি সংসদ সদস্য থাকতে সরকারি কোনো প্রকল্পের টাকা মেরে খায়নি এ কারণে সাধারণ ভোটাররা সহ জামায়াত বিএনপি’র ভোটারদের ভোটের আশাবাদী। তাই পালের হাওয়ায় ছুটে চলা নৌকাকে তিনি নোঙ্গরে আটকে জয় ছিনিয়ে আনার আশাবাদী। নৌকা, নোঙ্গর প্রত্যেকেই বিজয়ী হওয়ার আশাবাদী। সেটা দেখতে হলে আগামী ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটারদের অপেক্ষা করতে হবে সাধারণ ভোটারদের ধারণা ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন