হাফিজুর রহমান, কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা):
আওয়ামী লীগের সাতক্ষীরা- ৪ শ্যামনগর, কালিগঞ্জ (আংশিক) আসনের দলীয় মনোনয়ন পেতে নৌকার দখল নিয়ে মুখোমুখি দুই বারের এমপি,এস, এম জগলুল হায়দার বনাম দুই উপজেলার উপজেলা -ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে জানা যাবে মনোনয়ন দৌড়ে নৌকার মাঝি কে হবে। দলীয় মনোনয়নের আশায় ঢাকায় নেতা কর্মীরা সবাই চেষ্টা করছেন সমর্থন প্রদর্শনের চেষ্টা। যদিও এ নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই কেন্দ্রীয় নেতাদের। যোগ্য জনবান্ধব প্রার্থীই নির্বাচন করছেন দলীয় মনোনয়ন বোর্ড। যত বিরোধই থাকুক ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব লড়াইয়ের যুদ্ধে নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকবে এমনই বিশ্বাস কেন্দ্রীয় নেতাদের।
সাতক্ষীরা- ৪ শ্যামনগর কালীগঞ্জ (আংশিক) আসনে এমপি কে হটিয়ে মনোনয়ন পেতে চাইছেন শ্যামনগর- কালিগঞ্জ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের অধিকাংশ চেয়ারম্যানরা। কেবল চাওয়া নয় মরিয়া হয়ে কেন্দ্রে লবিং তদবির ও করছেন তারা। এমন অন্তত: ৭ জন আছেন যারা ইতিমধ্যে নৌকা পেতে দলীয় মনোনয়ন ফর্ম জমা দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় সভা হয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের। আজ রবিবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যেতে পারে। বিভাগ ওয়ারী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত হলেও তা প্রকাশ করছে না দল। সব বিভাগের মনোনয়ন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ হওয়ার পর একযোগে প্রকাশ করা হবে। দল যখন এভাবে এগোচ্ছে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ঠিক তখনই এম,পি আর উপজেলা -ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। নেতাদের অনুসারী কর্মীরা বিভক্ত নানা গ্রুপ, উপ -গ্রুপে।
এবার সাতক্ষীরা- ৪ আসনে এক ডজন অর্থাৎ ১২ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন এরমধ্যে ২ জন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এরা হলেন শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল হক দোলন এবং কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদী। বাকি ৫ জনের মধ্যে অনেকেই বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবার অনেকেই সাবেক চেয়ারম্যান এবং নৌকা নিয়ে উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করেছেন এরা হলেন গাজী আনিসুর রহমান শ্যামনগর উপজেলার বর্তমান কাশিমাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক স,ম লেলিন উপজেলা আওয়ামী লীগেরসহ-সভাপতি এবং গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, মেহেদী হাসান সুমন কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং কুশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট মোজাহার হোসেন কান্টু জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, এ,পি,পি এবং বিগত ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছে, এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশের সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার আতাউর রহমান বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেছেন।
আর অন্যদের মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী মাহমুদা খানম মেধা, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা বাবলুর রহমান, তরুণ লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জি,এম শফিউল্লাহ এবং ইতালি প্রবাসী ও ইতালি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শফিউল্লাহ ওরফে রনি আহমেদ এই নিয়ে সর্বমোট ১২ জন প্রার্থী সাতক্ষীরা- ৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তবে এর মধ্যে ফরম জমা দেওয়া অনেক প্রার্থী আছেন যারা রাজনীতিতে আওয়ামী পরিবারের সঙ্গে কখনো জড়িত ছিল না। প্রবাসে থেকে টাকার জোরে প্রবাসী আওয়ামী লীগের পদ পদবী নিয়ে এখন দেশে এসে নির্বাচনী মৌসুমী মুখ হিসাবে ফেসবুক, ব্যানার, ফেস্টুনখবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার প্রচারণায় ঝড় তুলে ব্যস্ত সময় পার করছে। যদি টাকার জোরে লবিং করে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় দলের মধ্যে নানান আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। আবার অনেকে আছে যারা সারা বছর ঢাকায় থেকে ছোটখাটো সহযোগী সংগঠনের নেতার পরিচয় দিয়ে নির্বাচনী মৌসুমী এলে এলাকায়এসে ফসল ফলানোর জন্য নমিনেশনের শোডাউনে ব্যস্ত সময় পার করছে। যাদের সঙ্গে এলাকার দলীয় নেতাকর্মী ছাড়া সাধারণ মানুষের সাথে কোন সম্পর্ক নাইএবং এলাকার মানুষ তাদেরকে চিনি না।
দলীয় নেতাকর্মীরা ছাড়াও এলাকার সাধারণ মানুষ চাচ্ছে সব সময় যে প্রার্থী সাধারণ মানুষের কাছে থেকে খোঁজখবর, সেবা এলাকার উন্নয়ন করতে পারবে এমন যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হোক যাতে করে দল এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হোক। বিগত ১০ বছরে বর্তমান সংসদ সদস্যএস এম জগলুল হায়দার এলাকায় যে উন্নয়ন করেছে তার চিত্র তুলে ধরে সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যাতে করে এবারও মনোনয়ন দিলে অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করার আশ্বাস দিয়ে দলীয় নেতাকর্মি ছাড়া সাধারণ মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নির্বাচন ছাড়াও মহাজোটের প্রার্থী নিয়ে এখনো রাজনীতির ধোঁয়াশা না কাটা পর্যন্ত এলাকার সাধারণ ভোটার এবং দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসবেনা। সেই মহেন্দ্রক্ষনের অপেক্ষায় নির্বাচনী এলাকার মানুষ।