বাণিজ্য ডেস্ক:
বিগত কয়েকমাস ধরে শেয়ারবাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে স্বর্ণের বাজারও। সর্বশেষ স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্স বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ডলার, যা করোনাকালীন সময়ের পর সর্বোচ্চ।
সম্প্রতি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বোপরি ডলারের অবনমন এবং ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে যাওয়ায় বেড়ে গেছে স্বর্ণের দাম।
ডলারের অবনমনের কারণে গত বছরের মতো এবারের বছরেও বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। এ অস্থিরতার কারণে অনেক দেশ রিজার্ভের স্বর্ণের মজুদ বাড়িয়েছে। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাই মজুদ বাড়িয়েছে প্রায় ২২০ টন।
বিশ্বের নানা দেশ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকে পড়ায়, বৈশ্বিক ঘটনা যেমনি শেয়ারবাজারকে প্রভাবিত করে একইভাবে প্রভাবিত করছে স্বর্ণের বাজারকে।
গত তিন সপ্তাহের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ সময়ের মধ্যে স্বর্ণের দাম বেড়ে আউন্সপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭ ডলার ২৯ সেন্টে উঠেছিল। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার দাম কিছুটা কমে ১ হাজার ৯৬৬ ডলার ৮৪ সেন্টে নামলেও শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেট থেকে শুরু করে অন্যান্য বাজারে স্বর্ণের দাম এখন আউন্সপ্রতি দুই হাজার ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করছে।
এর আগে করোনাকালে স্বর্ণের দাম কয়েক দফা বেড়ে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়ে। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় স্বর্ণের বাজারে আবারও অস্থিরতা দেখা দেয়। সর্বশেষ ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ স্বর্ণের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
চলতি বছর সেপ্টেম্বরের শুরুতে স্বর্ণের দাম কমতে শুরু করে। অক্টোবরের প্রথম কদিন এ ধারা বজায় থাকলেও ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইল-হামাস সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় আবারও বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়।
এবার যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে স্বর্ণের দাম স্বাভাবিকে নেমে আসবে কিনা এমন পূর্বাভাস দিতে গিয়ে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এখনই নিশ্চিত হয়ে কিছু বলা যায় না। বিশেষ করে বিনিয়োগে স্বর্ণ ডলারের এতটাই পরিপূরক হয়ে উঠেছে যে, ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে অস্থিরতার প্রভাবও স্বর্ণের বাজারে পড়তে পারে।
সম্প্রতি মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে গ্রেফতার হোন ক্রিপ্টো প্রতিষ্ঠান বিন্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা চেংপেং ঝাও। ঝাওয়ের গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অনেক বিনিয়োগকারী ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা-বেচায় স্বর্ণকে লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন। এ কারণে ক্রিপ্টো বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হলে এর প্রভাব স্বর্ণের বাজারে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে।
এ ব্যাপারে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান নোবেল গোল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কলিন প্লুম ইনভেস্টোপেডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির সঙ্গে স্বর্ণের নিবিড় সম্পর্ক আছে। ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের মতো ব্যাপক প্রভাব ফেলতে না পারলেও ক্রিপ্টো বাজারের অস্থিরতার আঁচ স্বর্ণের বাজারে লাগবে।