বাণিজ্য ডেস্ক:
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসগুলোর পরিদফতর (আরজেএসসি) পুরোপুরি ডিজিটাল ভার্সনে চলে যাবে, তখন কোনো ডকুমেন্ট ম্যানুয়ালি দেয়া লাগবে না। কোম্পানি নিবন্ধন পুরোপুরি অনলাইনে পাওয়া যাবে।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) অডিটোরিয়ামে কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর সংস্কারবিষয়ক সেমিনারে এ কথা বলেন বাণিজ্য সচিব।
তিনি বলেন, ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নে আরজেএসসির কার্যক্রম পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় আনতে বর্তমানে বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ডিসেম্বর নাগাদ আরজেএসসি পুরোপুরি ডিজিটাল ভার্সনে চলে যাবে। কোম্পানি নিবন্ধন পুরোপুরি অনলাইনে পাওয়া যাবে।
অটোমেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হলে সেবা প্রাপ্তির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন করে আরজেএসসির শাখা অফিস স্থাপনের কোনো প্রয়োজন হবে না বলেও জানান তপন কান্তি। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত কোম্পানি আইনে দেশের এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের কিভাবে আরও বেশি সহযোগিতা করা যায়, তা নিরূপণ করতে হবে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, আইন মন্ত্রণালয় হতে খসড়া কোম্পানি আইনের উপর বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যা নিয়ে কাজ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং দ্রুত তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে এটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন হবে।
কোম্পানি আইনে বেশি মাত্রায় ক্ষমতা আরোপ ও শাস্তি দেয়ার বিধান না থাকা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, এতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার বলেন, ব্যবসায়ী সমাজের আস্থা বৃদ্ধি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যমান কোম্পানি আইনের সংস্কার এবং দ্রুত বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। দেশে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপাশি কর্পোরেট খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কোম্পানি আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
দীর্ঘদিনের পুরনো এ আইনটি বর্তমানে দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলা ও বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বাড়াতে যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এ লক্ষ্যে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বাত্মক ব্যবহারের মাধ্যমে অটোমেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার ব্যবহার বাড়ানো এবং মেধা-সত্ত্ব আইনের ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন।
এছাড়াও কোম্পানি আইনটি বৈশ্বিক আইনের সঙ্গে মিল রেখে ‘মার্জার’ এবং ‘একুইজেশন’কে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান সামীর সাত্তার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের সভাপতি মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, কোম্পানি আইন আধুনিক ও যুগোপযোগী হলে ব্যবসা পরিচালন প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে। তাই এ আইন দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশোধন করতে হবে। পাশাপাশি ২-৩ বছর অন্তর অন্তর আইনটির সংস্কার করার বিধান রাখা প্রয়োজন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাভেদ আখতার, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরজেএসসিস) রেজিস্ট্রার (যুগ্ম সচিব) মো. আব্দুস সামাদ আল আজাদ, আইএফসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হোল্টম্যান প্রমুখ।