হোম খেলাধুলা ফাইনালে একটা দল অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া হবে: কামিন্স

স্পোর্টস ডেস্ক:

সঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিল অস্ট্রেলিয়া। সেটা খুঁজে পাওয়া মাত্রই, বিশ্বকাপে জ্বলে উঠেছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। এখন আর সেই ধারাবাহিকতা হারাতে রাজি নয় তারা। মন্তব্য অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের। টানা সাত ম্যাচ জিতে এখন সেমির অপেক্ষায় অজিরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম পর্বে হারলেও, সেটা নিয়ে ভাবতে নারাজ ক্যাঙ্গারুরা। আহমেদাবাদের ফাইনাল খেলতে মুখিয়ে কামিন্সের দল।

চেন্নাইয়ের চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের প্রথম অ্যাসাইনমেন্টটা এতদিনে ভুলে গেছে অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিকদের বিপক্ষে সে ম্যাচে যে লজ্জায় ডুবতে হয়েছিল অজিদের, এরপর সেটা তাদের ভুগিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও। টানা দুই ম্যাচ হেরে বিশ্ব আসর শেষ কবে শুরু করেছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপের সফলতম দলটি, তা ঘাটতে নাভিশ্বাস ছুটেছে পরিসংখ্যানবিদদেরও।

সমর্থকরা বিশ্বাস করতে পারেননি নিজেদের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকেও। টানা দুই ম্যাচ শুধু হারই নয়, এক প্রকার উড়ে গিয়েছিল তারা প্রতিপক্ষের কাছে। টপ অর্ডার থেকে মিডল অর্ডার, রান পায়নি কেউ। বোলাররা ছিলেন নিজেদের ছায়া হয়ে। স্টার্ক-কামিন্স-হ্যাজেলউডের বলে ছিল না কোনো ধার, জাম্পা খুঁজে পাচ্ছিলেন না লাইন লেংথ।

কিন্তু তৃতীয় ম্যাচ। টিকে থাকতে হলে হারা যাবে না, এমন সমীকরণে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া এক ভিন্ন অস্ট্রেলিয়াকে দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। ডমিটেনিং শব্দটা যে ক্রিকেটে শুধু তাদেরই অধিকারে, সেটা আরও একবার জানান দিলেন অজিরা। এরপর একসঙ্গে ফর্মে ফিরলেন সবাই। রান আসলো ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, লাবুশেনদের উইলোতে। বল হাতে উইকেট আসতে থাকে জাম্পার ঝুলিতে। আর ম্যাক্সওয়েল যা করেছেন আফগান ম্যাচে সে তো এখন ক্রিকেটের হল অব ফেমেরই একটা অংশ।

তবে, এরকম ঘুরে দাঁড়ানোতে খুব বেশি অবাক নন এ দলের নেতা প্যাট কামিন্স। বরং জানালেন, তিনি জানতেন এমন কিছু হবেই। অপেক্ষায় ছিলেন সঠিক সময়ের।

গণমাধ্যমকে কামিন্স বলেন, ‘এটা বিশ্বকাপ। এখানে শুরুতেই সব কিছু শেষ, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। আমি জানতাম, আমরা ফিরে আসব। সঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম। সেটা দেখা পাওয়া মাত্রই আমাদের আর পেছনে তাকাতে হয়নি। এখান থেকে আর ফেরত যাওয়ার কিছু নেই। আমরা শুধু সামনেই তাকাচ্ছি। আহমেদাবাদের ফাইনালে একটা দল অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া হবে।’

বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল আর দক্ষিণ আফ্রিকা, দৃশ্যগুলো বড্ড পরিচিত অজিদের কাছে। ১৯৯৯ এ ঘটে যাওয়া ঘটনাটা এখনো দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে প্রোটিয়াদের। যদিও, সে সময়টা পেছনে ফেলে এসেছে ক্যাঙ্গারু বাহিনী। তবে, এই আসরে প্রথম পর্বের হারটা পোড়াচ্ছে তাদের। যদিও, সে দলটার সঙ্গে বর্তমান দলের আত্মবিশ্বাস মেলাতে চান না কামিন্স। তার সোজা সাপ্টা কথা, সেটা অতীত। আর অতীত নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করতে চায় না অস্ট্রেলিয়া।

তবে, সমস্যা করতে পারে ইডেন গার্ডেন্সের আবহাওয়া। রিপোর্ট বলছে, বৃষ্টি বাগরা দিতে পারে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে। রিজার্ভ ডেতেও গড়াতে পারে ম্যাচ। সেক্ষেত্রে, ব্যাটিং প্যারাডাইস উইকেটও রূপ বদলাবে অনেকটা। যদিও, এত দ্রুত এসব নিয়ে না ভেবে নিজেদের কাজটা করে যেতে চান কামিন্স। আর সময় আসলে, সিদ্ধান্ত নিতে চান অবস্থা বুঝে।

কামিন্স বলেন, ‘৯৯, ২০১৫ এগুলো সব অতীতের জ্ঞল্প। অতীত পরিসংখ্যান আপনাকে ম্যাচ জেতাবে না। গিভেন ডে তে যারা ভালো করবে, জয়ী তারাই হবে। প্রথম পর্বের ম্যাচে যে ভুলগুলো হয়েছিল, নিশ্চিত থাকতে পারেন, এ ম্যাচে সেটা হবে না। কলকাতায় আফ্রিকানরা নতুন অস্ট্রেলিয়াকে দেখবে। আবহাওয়া আমাদের হাতে নেই, তাই এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে চাই না। যদি, বৃষ্টি ম্যাচ নষ্ট করে দেয়, সেটা নিয়ে তখন ভাবব।’

বৃহস্পতিবার (১৬ই নভেম্বর) কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন