আশাশুনি প্রতিনিধি :
আশাশুনিতে ভুয়া মৎস্যজীবী সমিতির দরপত্র বাতিল ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নায়েবের প্রতিবেদন। আশাশুনির বড়দল ইউনিয়নে ভুয়া মৎস্যজীবী (জেলে) সেজে প্রকৃত মৎস্য জীবীদের সাথে প্রতারণা ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ও তাহা পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার গাত্র দাহ শুরু, প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে দৌড়ও ঝাপ শুরু করে ইউপি সদস্য নীলকণ্ঠ গংরা ।
একদিকে নিজের অবৈধস্থাপনা রক্ষা এবং সাব লিজের মাধ্যমে জলমহালের শ্রেণী পরিবর্তন করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে অপর দিকে ভুয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির অনুকুলে ধাড়িয়াখালী খাল জলমহালের ইজারা নেওয়ার জন্য জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বমহলে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন ইউপি সদস্য নীলকন্ঠ গাইন ও তার অনুসারিরা।
সরেজমিনে ঘুরে ও বড়দল ইউনিয়ন ভুমি সহকারি কর্মকর্তার এক প্রতিবেদন সূত্রে দেখা যায় উক্ত ইউপি সদস্য নীলকন্ঠ গাইন ধাড়িয়াখালী ও হেতাইলবুনিয়া জলমহাল যার মৌজা ফকরাবাদ জেএল নং-৯৮ খতিয়ান নং ০১, দাগে ৯৩৪ দাগে ০৬শতক খাল ভরাট করে পাকা বাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করে যাচ্ছেন। যাহা সম্পুন্ন সরকারি নীতিমালা পরিপন্থি।
তার অন্যান্য অনুসারিরা রনজিৎ গাইন, রনজিদ হালদার, পরিমল সরদার, দীপক গাইন, বিশ্বজিত গাইন, মহাদেব গাইন, বিধান মন্ডল, চিত্ত মন্ডলসহ আরও অনেকেই উক্ত খাল ভরাট করে শ্রেণী পরবতন করে পাকা বাড়ী, রাইচমিল, ক্ষেত, কাচা পাড়ি, পুকুর ইত্যাতি তৈরী করে নীলকন্ঠকে বার্ষিক হারে টাকা দিয়ে ভোগ দখল করে যাচ্ছেন বলে স্থানীয় জানান।
এসকল অবৈধ স্থাপনা ও ভুয়া মৎস্যজীবি (জেলে) সমিতি হেতাইবুনিয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে বিগত ৩০জুন মানবন্ধন করলে গাত্রদাহ শুরু হয় সরকারি খাস জমি জবদখলকারি ইউপি সদস্য ও তার অনুসারিদের বিরুদ্ধে। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় ২০০৯ সালে উক্ত নিলকন্ঠ গংরা অবৈধভাবে ধাড়িয়াখালী ও হেতাইলবুনিয়া খাল জলমহাল দখল করে রাখলে তদককালিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ১৬/০৮/২০০৯ তারিখের উ:নি:অ/আশা/৯-১/০১-৭৭২(৩) স্বারকের তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
কিন্তু উক্ত মামলাবাজ হেতাইলবুনিয়া যুব সমবায় সমিতি সম্পাদক ইউপি সদস্য নীলকন্ঠ গাইন ২০/০৮/০৯ তারিখে আশাশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিবাদী করে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালাতে ৮৯/০৯ (খাস) নং মিস মামলা দায়ের করেন। তদসময় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শুধুমাত্র প্রকৃত মৎস্যজীবিদের সমিতির মধ্য ইজারা দেওয়ার জন্য ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের দিকে প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে মৎস্যজীবি না হয়েও ভুয়া মৎস্যজীবি সেজে হেতাইলবুনিয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি গঠন নিবন্ধন করেন।
কিন্তু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভুমি মন্ত্রণালয়ের শাখা ৭ এর ২৩ জুন ২০০৯ তারিখের প্রকাশিত সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি বর্হিভুত যাহার স্বাক্ষর নং ভু:ম:/শা-৭বিবিধ (জল) ০২/২০০৯-১৯১ এর ২(খ)ও ৫এর ধারা অনুসারে নীলকন্ঠ গাইন গংরা যোগ্য নহে। যার ২. এর ক) প্রকৃত মৎস্যজীবি, মৎস্যজীবি সংগঠনের, জলমহাল এর সংজ্ঞা: ক) যিনি প্রাকৃতিক উৎস হতে মাছ শিকার এবং বিক্রয় করেই প্রধানত: জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি প্রকৃত মৎস্যজীবি বলে গণ্য হবেন।
এবং (খ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে তবে কোন সমিতিতে যদি একমন কোন সদস্য থাকেন যিনি প্রকৃত মৎস্যজীবি নহেন তবে সে সমিতি কোন জলমহাল বন্দোবস্ত পাওয়ার যোগ্য হবে না। যাহা সরকারি নীতিমালা সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে বলে প্রতিয়মান। সুতরাং সরকারি নীতিমালা লংঘন করা ও সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে দখল করায় প্রশাসনের নিকট হেতালবুনিয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নিবন্ধন এবং জলমহালের দরপত্র বাতিলের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।